যারা স্বাধীনতা দিবস বক্তৃতা পাওয়ার জন্য গুগলে অনুসন্ধান করছেন। তাদের জন্য আজকের এই পোস্ট টা তুলে ধরা হয়েছে ২৬ মার্চ স্বাধীনতা দিবস নিয়ে বক্তব্য। ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের মানুষ র*ক্তক্ষয়ী যু*দ্ধে অংশগ্রহণ করে পাকিস্তানের হাত থেকে একটি স্বাধীন রাষ্ট্র তৈরি করেছিল। আজ বাংলাদেশের ৫১ তম স্বাধীনতা দিবস। স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে বাংলাদেশের সকল সরকারি ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে ভাষণ দেওয়ার আয়োজন করা হয়।
আপনিও হয়তো অনুষ্ঠানের স্টেজে উঠে ভাষণ দেবেন। কিন্তু কিভাবে স্বাধীনতা দিবসের বক্তৃতা তৈরি করবেন বুঝে উঠতে পারছেন না। আপনাদের জন্য এখানে সব চাইতে ভাল ভাবে তৈরি করা হয়েছে স্বাধীনতা দিবসের বক্তব্য। তাই নিচে থেকে স্বাধীনতা দিবসের সেরা বক্তব্য টি সংগ্রহ করে নিন। ১৯৭১ সালের 25 শে মার্চ বাঙালি পশ্চিম পাকিস্তানের দ্বারা নিপীড়িত হন। তারপরেই স্বাধীনতা যু*দ্ধের ঘোষণা ডাক আসে।
পরবর্তীতে বাংলাদেশের সকল মানুষ স্বাধীন বাংলাদেশ গড়ার লক্ষ্যে দীর্ঘ নয় মাস যু*দ্ধে লিপ্ত হয়। অবশেষে 30 লক্ষ শহীদের বিনিময়ে তারা ছিনিয়ে আনে স্বাধীনতা। আজকের পোস্টটি আপনাদের জন্য স্বাধীনতা দিবসের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ বিষয় সম্পর্কে বক্তৃতা তুলে ধরা হয়েছে। যারা বিভিন্ন প্রোগ্রাম বা অনুষ্ঠানে স্বাধীনতা নিয়ে বক্তৃতা দেবেন। তাদের জন্য সবচাইতে ভালো স্বাধীনতা দিবস বক্তৃতা উল্লেখ করেছি আমরা।
Contents
স্বাধীনতা দিবসের ভাষণ
যারা স্বাধীনতা দিবসের অনুষ্ঠানে বাংলার স্বাধীনতা যু*দ্ধ ও শহীদদের নিয়ে ভাষণ দেবেন। তাদের জন্য আগে থেকেই স্বাধীনতা দিবসের ভাষণ প্র্যাকটিস করার প্রয়োজন পড়বে। তা আপনাদের জন্য আজকের এই পোস্ট এ বাংলাদেশের স্বাধীনতা যু*দ্ধের প্রেক্ষাপট ভাষণ উল্লেখ করেছে আমরা। যেখানে বাংলাদেশের মুক্তিযো*দ্ধাদের বিভিন্ন ইতিহাস ও ঘটে যাওয়া স্মরণীয় কথা উল্লেখ করেছি আমরা।
Read More
মহান স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে বক্তব্য
একটি ভাল মানের বক্তব্যই পারে আপনার সৃজনশীল দক্ষতাকে উপস্থাপন করতে। তাই আপনি যদি স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে সবার সামনে বক্তব্য রাখতে চান। তাহলে আপনাকে অবশ্যই 1971 সালের যু*দ্ধের বিভিন্ন স্মরণীয় তারিখ গুলো জানতে হবে। আপনাদের যাতে কষ্ট করে স্বাধীনতা দিবসের বক্তব্য তৈরি করতে না হয়। তার জন্য আমরা আমাদের আজকের পোস্টে স্বাধীনতা দিবসের বক্তব্য উল্লেখ করেছি।
স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে বক্তব্য
নিচে তুলে ধরা হয়েছে স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে বক্তব্য।
২৬ শে মার্চ এর সংক্ষিপ্ত বক্তব্য
সম্মানিত সভাপতি, মাননীয় প্রধান অতিথি, উপস্থিত সুধিমন্ডলী,
আজ ২৬ শে মার্চ, “ স্বাধীনতা দিবস” বিষয়ে আয়োজিত আজকের এই আলোচনা সভার শুরুতে আপনাদের প্রতি আমার প্রাণঢালা অভিনন্দন ও শুভেচ্ছা।
বাংলাদেশে বসবাসকারী জনগোষ্ঠীর জাতীয় জীবনে স্বাধীনতা দিবসের গুরুত্ব অপরিসীম। স্বাধীনতা মানেই হলো- পরাশক্তির কাছে মাথা নত না করে কিছু ছিনিয়ে নেওয়া। ১৯৭১ একটি বিদ্রোহ, বিপ্লব ও সংগ্রামের নাম। ‘স্বাধীনতা দিবস’ হল মায়ের ভাষায় কথা ও নিজের দেশের সম্মান রক্ষা করার রাজপথ কাপানো মিছিল, স্লোগান, আন্দোলনে মুখরিত একটি মুহূর্ত।
এই দিনে বাংলা মায়ের দামাল ছেলেরা তাদের বুকের তাজা র*ক্তে পিচ ঢালা রাজপথে সিক্ত করে মায়ের সম্মান ও দেশের মানুষের অধিকার কে আদায় করেছে পশ্চিমা শাসক গোষ্ঠীর কবল থেকে। ১৯৭১ সালের ২৫ শে মার্চ এদেশের জাতীয় জীবনে একটি স্মরণীয় ও কালরাত। আর ১৯৭১ সালের মার্চ মাসকে কেন্দ্র করেই বাংলার স্বাধীনতা আন্দোলনের সূচনা ঘটে এবং শোষণ ও পরাধীনতার শৃংখল থেকে মুক্ত হয় এদেশ ও জাতি।
সম্মানিত সুধিবৃন্দ, বাংলা নামক দেশটি বিভিন্ন কারণে বিশ্ববাসীর দৃষ্টি আকর্ষণ করেছে। তন্মধ্যে প্রথম এবং অন্যতম কারণ হল ভাষার জন্য সংগ্রাম, আত্মত্যাগ, বিপ্লব পৃথিবীর অন্য কোন এসে সংঘটিত হয়নি। ইতিহাসে বিশ্লেষণ করলে দেখা যায়, প্রত্যেক জাতিই জন্মগত ভাবে প্রাপ্ত ভাষায় স্বাধীনভাবে কথা বলে এবং মনের ভাব প্রকাশ করে।
ভৌগলিক স্বাধীনতা না থাকলেও ভাষার স্বাধীনতা মানুষের জন্মগত অধিকার কিন্তু বিশ্ববাসী বিষ্ময়বিভুতচিত্তে অবলোকন করেছে। জন্মগত অধিকার মায়ের ভাষায় কথা বলার জন্য বাংলার ছাত্র, শিক্ষক, বুদ্ধিজীবী, শ্রমিক, পেশাজীবী, কৃষক, মজুর থেকে শুরু করে সর্বস্তরের লেলিয়ে দেয়া পুলিশের গুলিতে জীবন দিয়েছে সালাম, বরকত, রফিক, জব্বার সহ অসংখ্য তাজা প্রাণ। র*ক্তের বন্যায় সিক্ত হয়েছে বাংলা মায়ের বুক।
আমরা জানি, ১৯৪৭ সালে ভারত বর্ষ ব্রিটিশ শাসন মুক্ত হয় এবং সাম্প্রদায়িকতার ভিত্তিতে পূর্ব পাকিস্তান পশ্চিম পাকিস্তান নামে দুটি নতুন রাষ্ট্রের অভ্যুদ্বয় ঘটে। উভয় পাকিস্তানের শাসন ব্যবস্থা ছিল পশ্চিম পাকিস্তানের হাতে। তারা পূর্ব পাকিস্তানের প্রতি শুরু থেকেই বৈষম্য নীতি ও শোষকের ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়।
১৯৪৮ সালের ২১ মার্চ পাকিস্তানের প্রতিষ্ঠাতা মোহাম্মদ আলী জিন্নাহ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এক জনসভায় উর্দুকে পাকিস্তানের একমাত্র রাষ্ট্রভাষা হিসেবে ঘোষণা দেন এবং ২৪ মার্চ কার্জন হলের অনুষ্ঠানেও তিনি এ ঘোষণা পুনর্ব্যক্ত করেন। ১৯৫২ সালের ৩০ জানুয়ারি ঢাকার এক জনসভায় পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী খাজা নাজিমুদ্দিন উর্দুকে পাকিস্তানের রাষ্ট্রভাষা হিসেবে ঘোষণা করলে, বিক্ষোভে ফেটে পড়ে সমগ্র বাংলা ভাষাভাষী জনগোষ্ঠী।
গঠিত হয় “ তমদ্দুন মজলিস” ও “ ভাষা সংগ্রাম পরিষদ”। সর্বস্তরের বাঙালির অংশগ্রহণে মিছিল, মিটিং স্লোগানে মুখরিত হয় বাংলার আকাশ বাতাস এবং তা চূড়ান্ত রূপ লাভ করে ১৯৫২ সালে ২১ ফেব্রুয়ারি। অনেক, অনেক র*ক্ত, অনেক প্রাণের বিনিময়ে অর্জিত হয় রাষ্ট্রভাষা বাংলা। শেষ পর্যন্ত শাসকগোষ্ঠী বাংলা কে পূর্ব বাংলার রাষ্ট্রভাষা হিসেবে স্বীকৃতি দানে বাধ্য হয়।
ইতিহাস এখানেই শেষ হয়নি। একুশকে কেন্দ্র করেই শুরু হয় বাঙালির স্বাধীনতা অর্জনের প্রচেষ্টা। ৫৪ সালের প্রাদেশিক নির্বাচন, ৬২ সালের ছাত্র অভ্যুত্থান, ৬৬ সালের ৬ দফা ভিত্তিক আন্দলোন, ৬৯-এর গণঅভ্যুত্থান ও ৭০- এর সাধারণ নির্বাচনে বাঙালির অভাবনীয় সফলতা একুশকে কেন্দ্র করেই অর্জিত হয়েছে। মূলত একুশকে কেন্দ্র করেই বাঙালি সংগঠিত হয়েছে এবং আন্দোলন ও সংগ্রামের মাধ্যমে ন্যায্য অধিকার আদায়ের কৌশল র*ক্ত করেছে।যার ফলে ১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযু*দ্ধের মধ্য দিয়ে অভ্যুদয় ঘটে স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশের।
তাই জাতীয় জীবনের সর্বক্ষেত্রেই স্বাধীনতা দিবসের তাৎপর্য অপরিসীম। বাংলাদেশের আর্থসামাজিক, সাহিত্য, সভ্যতা ও সংস্কৃতির ক্ষেত্রে গভীর তাৎপর্যপূর্ণ চেতনাবাহী একটি স্মরণীয় দিন স্বাধীনতা দিবস। এদিন বাঙালি সমাজের রাজনৈতিক ও সামাজিক অধিকার প্রতিষ্ঠার দিন। আজ বিশ্ববাসী এ অসীম ত্যাগ ও মাতৃভাষার প্রতি গভীর মমত্ববোধ এর স্বীকৃতি দিয়েছে। স্বাধীনতা দিবসের সাথে অবিচ্ছেদ্য হয়ে আছে ৩০ লক্ষ শহীদের নাম, যাদের স্মৃতি চির ভাস্বর ও অনন্তকালের পথ পরিক্রমায় মৃত্যুহীন।
পরিশেষে বলতে চাই, স্বাধীনতা দিবস আমরা ছিনিয়ে এনেছি পশ্চিম পাকিস্তানের হাত থেকে। এই স্বাধীনতা রক্ষা করার দায়িত্ব আমাদের। আমরা আমাদের বর্তমান ও আগামী প্রজন্মকে স্বাধীনতার ইতিহাস ও গুরুত্ব সম্পর্কে বোঝাবো। যাতে তারাও বাঙালির স্বাধীনতা যু*দ্ধের কথা সারাজীবন মনে রাখে। সবাইকে সংগ্রামী শুভেচ্ছা জানিয়ে আজকের মত এখানেই শেষ পড়ছি। জয় বাংলা জয় বঙ্গবন্ধু।
স্বাধীনতা দিবসের তাৎপর্য
অনেকেই আছেন যারা 26 শে মার্চ স্বাধীনতা দিবসের তাৎপর্য নিয়ে অনুসন্ধান করেন। তাদের জন্য আজকের এই পোস্টের স্বাধীনতা দিবসের তাৎপর্য উল্লেখ করা হয়েছে।
বাংলাদেশের প্রতিটি মানুষের জীবনে স্বাধীনতা দিবসের তাৎপর্য অনেক বেশি। কারণ বাংলাদেশে অনেক ত্যাগ তিতিক্ষার বিনিময়ে স্বাধীনতা দিবস পেয়েছে। তাই আজকের এই স্বাধীনতা দিবস প্রতিটি মানুষের কাছে লালিত একটি স্বপ্ন। বাংলাদেশের সকল মানুষ প্রতিজ্ঞা ও সংগ্রামের মাধ্যমে 1971 সালে পাকিস্তানের হাত থেকে ছিনিয়ে এনেছিল স্বাধীনতা। প্রায় ত্রিশ লক্ষ শহীদের বিনিময়ে বাংলাদেশ পেয়েছে একটি স্বাধীন দেশ।
তাই আমরা যদি সেই যু*দ্ধে জয়লাভ না করতাম তাহলে আজ আমরা স্বাধীন ভাবে বাংলায় কথা বলতে পারতাম না ও আমরা স্বাধীন দেশে বসবাস করতে পারতাম না। জাতীয় ঐক্য ও দেশপ্রেমের সর্বোচ্চ অনুভূতি রয়েছে বাংলাদেশের প্রতিটি মানুষের মাঝে। বাংলাদেশের 26 শে মার্চ প্রতিবছর শ্রদ্ধা ও ভক্তিতে আনন্দের সাথে পালন করা হয়।
সকল স্বাধীনতা শহীদদের আমরা এ দিনটিতে স্মরণ করি। তাদের আত্মত্যাগের বিনিময়ে আমরা পেয়েছি স্বাধীন রাষ্ট্র। তাই এই দিনের তাৎপর্য প্রতিটি মানুষের জন্য অনেক বেশি। বাংলাদেশের মুক্তিযু*দ্ধে অংশগ্রহণকারী প্রতিটি মানুষ তাদের নিজের জন্য যু*দ্ধ করেনি যু*দ্ধ করেছে পুরো বাংলাদেশের জন্য একটি স্বাধীন রাষ্ট্রের জন্য। 1971 সালের 26 শে মার্চ শুরু হয় বাংলাদেশের স্বাধীনতা যু*দ্ধ।
স্বাধীনতা দিবস অর্থাৎ ২৬ মার্চের স্বাধীনতার ঘােষণা সৃষ্ট কোনাে আবেগময় ঘােষণা নয়। ২৬ শে মার্চের পেছনে রয়েছে বাঙালির আত্মত্যাগ, আত্মবিসর্জন ও আন্দোলন-সংগ্রামের সুদীর্ঘ র*ক্তাক্ত পথ। এই অমসৃণ পথ পাড়ি দিয়ে এই দিনে বাঙালি জাতি আরেক র*ক্তাক্ত পথে চলতে শুরু করল। অতঃপর দীর্ঘ নয় মাসের যু*দ্ধ, সংগ্রাম, মৃত্যু, লাঞ্ছনা ও চরম আত্মত্যাগের মাধ্যমে আমরা লাভ করি বিজয়।
অর্জন করি সবুজ-লালের মিশ্রণে তৈরি একটি পতাকা, একটি গর্বিত ভূখণ্ড। ‘৫২-এর ভাষা আন্দোলন, ‘৫৪-এর সাধারণ নির্বাচন, ‘৬২-এর শিক্ষা আন্দোলন, ‘৬৬-এর ঐতিহাসিক ছয় দফা আন্দোলন, ‘৬৯-এর গণঅভ্যুত্থান- এরকম অগণিত আন্দোলন সংগ্রামের ভেতর দিয়ে বাঙালি জাতি যে প্রত্যাশাকে লালন করে অগ্রসর হয়েছিল। তারপর একাত্তরের র*ক্তাক্ত মার্চের অসহযােগ আন্দোলন পেরিয়ে ২৬ শে মার্চে সেই প্রত্যাশা, সেই স্বপ্ন পরিণত হয়েছিল মহান স্বাধীনতা লাভের আকাঙ্ক্ষায়।
আরও দেখুনঃ