আজকে আমরা কথা বলবো শহীদ দিবস অনুচ্ছেদ রচনা নিয়ে। প্রতিদিন অসংখ্য মানুষ ইন্টারনেটে অনুসন্ধান করে শহীদ দিবস অনুচ্ছেদ রচনা পেতে। তাই আমরা আজকের এই পোস্টে শহীদ দিবস অনুচ্ছেদ রচনা দিয়েছি। অনুচ্ছেদ শহীদ দিবস সবার কাছে অনেক গুরুত্বপূর্ণ। আবার অনেকে শহীদ দিবস অনুচ্ছেদ রচনা class 9 লিখে অনুসন্ধান করে। তাই আজকের এই পোস্ট থেকে শহীদ দিবস অনুচ্ছেদ রচনা পেয়ে যাবেন।
শহীদ দিবস রচনা
মাতৃভাষার জন্য আন্দোলন করতে গিয়ে অনেকেই শহীদ হয়েছেন। তাই আপনি যদি শহীদ দিবস রচনা পেতে চান। তাহলে এখান থেকে শহীদ দিবসের রচনা পাবেন। কারণ আমরা এখানে শহীদ দিবস ও একুশের চেতনা রচনা দিয়েছে। আশা করি রচনা আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস রচনা ভালো লাগবে আপনাদের। শহীদ দিবস রচনা আর ভিতরে শহীদ দিবসের তাৎপর্য সঠিকভাবে তুলে ধরা হয়েছে।
শহীদ দিবস অনুচ্ছেদ রচনা
অনেকেই আছেন যারা এই শহীদ দিবসে রচনা প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করবেন। তাদের জন্য এখানে শহীদ দিবস অনুচ্ছেদ রচনা দেয়া হলো। এ রচনা গুলো আপনাদের শহীদ দিবস রচনা প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করতে অনেক সাহায্য করবে।
আরও দেখুনঃ
- আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস রচনা
- ২১ শে ফেব্রুয়ারি শুভেচ্ছা এসএমএস, বাণী ও উক্তি
- ২১ শে ফেব্রুয়ারি জাতীয় পতাকা উত্তোলনের নিয়ম
- ২১ শে ফেব্রুয়ারি কবিতা
- ২১ শে ফেব্রুয়ারি উপলক্ষে ভাষণ ও রচনা
শহীদ দিবস ও একুশের চেতনা রচনা
আমরা চেষ্টা করেছি এখানে সঠিকভাবে শহীদ দিবস এবং একুশের চেতনা নিয়ে একটি অনুচ্ছেদ রচনা লেখার জন্য। আপনারা সঠিকভাবে লেখাগুলো পড়ুন এবং এগুলো একটি আপনাদের সম্পূর্ণ অনুচ্ছেদ রচনা দিবে।
ভূমিকাঃ
বাঙালির ইতিহাস সরলরৈখিক না হলেও তাদের ইতিহাসে অসংখ্য উজ্জ্বল চিহ্ন আছে যা অর্জনের সমৃদ্ধতায় সমুজ্জ্বল। এমনই একটি চিহ্ন নিঃসন্দেহে১৭ নভেম্বর, ১৯৯৯। ইউনেস্কোর সিদ্ধান্তে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস হিসেবে একুশে ফেব্রুয়ারিকে স্বীকৃতি বাঙালির জন্য এ উজ্জ্বল বাক্যের সূচক। বাঙালি জাতি হিসেবে আমাদের গর্ব অহংকার বাংলা ভাষা
‘মাদার ল্যাঙ্গুয়েজ অফ দি ওয়ার্ল্ড” আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃতি পেল। বিশ্বের মানুষ এখন থেকে প্রতিবছর একুশে ফেব্রুয়ারীতে বাঙালি জাতির মাতৃভাষা ভালোবাসার গাঁথা শুনবে এবং নিজেরাও উদ্বুদ্ধ হবে এবং একই সঙ্গে ছোট-বড় সকল জাতিগোষ্ঠীর মাতৃভাষাই মর্যাদার সঙ্গে অবস্থান করবে।
ভাষা আন্দোলনের আদি কথাঃ
পাকিস্তান সৃষ্টির অব্যবহিত পূর্বে আলিগড় মুসলিম বিশ্ববিদ্যালয়ের তৎকালীন উপাচার্য ড. জিয়াউদ্দিন উর্দুকে পাকিস্তানের একমাত্র রাষ্ট্রভাষা করার প্রস্তাব উপস্থাপন করেন । পূর্ববঙ্গ থেকে ডঃ মুহাম্মদ শহীদুল্লাহ এ প্রস্তাবের ঘোর বিরোধিতা করেন এবং বাংলা কে রাষ্ট্রভাষা করার দাবি উত্থাপন করেন। এভাবে পাকিস্তান জন্মের আগেই ভাষা আন্দোলনের সূত্রপাত ঘটে।
বিশ্বসভায় বাংলাদেশের ও বাঙালি জাতির মহা বিজয়ঃ
“ আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস” ঘোষনা বিশ শতকের অন্যতম ঘটনা। যা ছলো এদিন বাংলাদেশের জাতির ইতিহাসের অন্যতম মাইলফলক। আজ তা বিশ্ব সম্প্রদায়ের কাছে স্বরণীয় পালনীয় একটি দিবস হিসেবে স্বীকৃতি লাভ করাতে দলমত নির্বিশেষে সকল বাংলাদেশী নাগরিক গর্বিত ও আনন্দিত। দেশের মানুষ নানাভাবে নানা প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে স্মরণ করবে আমাদের এই যুগান্তকারী অর্জনকে । বাঙালি জাতির র*ক্তস্নাত ভাষা আন্দোলন একুশে ফেব্রুয়ারি আজ ইতিহাসের গণ্ডি অতিক্রম করে সমগ্র বিশ্বে সম্পদে পরিণত হয়েছে। বাংলাদেশের জন্য এটি একটি অনন্য অর্জন। আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস সারা বিশ্বের মানুষের জন্য এক ধরনের প্রতীকী আত্মপ্রসাদের জন্ম দিয়েছে। বাঙালি আত্মপ্রসাদের মুর্ত রুপ বাংলা একাডেমি।
কারণ অমর একুশের ভাষা শহীদদের র*ক্তের শব্দ ভিতের উপর দাঁড়িয়ে আছে এ প্রতিষ্ঠান। ইউনেস্কো একুশে ফেব্রুয়ারিকে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস হিসেবে পালনের সিদ্ধান্ত নিয়ে শুধু মাতৃভাষার জন্য আমাদের সংগ্রাম এবং আত্মদানকেই স্বীকৃতি দেয়নি, অমর একুশের শহীদের আত্মদান থেকে উৎসারিত স্বাধীনতা আন্দোলন স্বাধীনতা অর্জন কেউ মর্যাদা দিয়েছে।
বিশ্বের বিভিন্ন দেশে প্রতিবছর বাংলাদেশের শহীদ দিবস একুশে ফেব্রুয়ারি যখন আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস হিসেবে মর্যাদা সঙ্গে পালিত হবে তখন আমাদের একবুক অনাবিল আনন্দ ও অতুলনীয় গর্ববোধে ভরে উঠবে। মহান মে দিবস এখন শুধু শিকাগো শহরে সীমাবদ্ধ থাকছে না পৃথিবীর সকল দেশে পালিত হচ্ছে, তেমনি একুশে ফেব্রুয়ারি ঢাকার শহীদ মিনারে নয়, বরং পৃথিবীজুড়ে মর্যাদার সঙ্গে পালিত হবে। সেসব দেশের জনগণ নতুন করে জানতে পারবে কিভাবে সালাম, বরকত , রফিক, জব্বার নিজেদের অমূল্য প্রাণের বিনিময়ে মাতৃভাষাকে রক্ষা করেছেন।
মাতৃভাষা হিসেবে বাংলার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রঃ
ব্রিটিশ আমল থেকে পাকিস্তানি আমুল পর্যন্ত মাতৃভাষা হিসেবে বাংলার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র অব্যাহত ছিল। ১৯৪৭ সালে দেশভাগের পূর্ব থেকেই বাংলাভাষাকে লড়াইয়ে নামতে হয় উর্দুর প্রতিপক্ষ হিসেবে। পাকিস্তান প্রতিষ্ঠার পূর্বে রাষ্ট্রভাষা বিতর্কে উর্দুর দাবিদারদের যারা বাংলা ভাষার স্বপক্ষে কলম যু*দ্ধের সূচনা করেন, তাদের মধ্যে ডঃ মুহাম্মদ শহীদুল্লাহর পরেই উল্লেখ করতে হয় কবি ফখরুল আহমদ ও প্রাবন্ধিক আব্দুল হকের নাম। ডঃ মুহাম্মদ শহীদুল্লাহ দৈনিক আজাদে এক প্রবন্ধে বলেন, “ অধিকাংশ জনসংখ্যার ভাষা হিসেবে বাংলায় পাকিস্তানের রাষ্ট্রভাষা হওয়া উচিত, যদি দ্বিতীয় রাষ্ট্রভাষা করার প্রয়োজন হয় তখন উর্দুর কথা বিবেচনা করা যেতে পারে”।
কিন্তু পাকিস্তানের তৎকালীন উচ্চমহল, শাসক এবং প্রশাসক যারা মোহাজের হয়ে ভারত থেকে পাকিস্তান এসেছিলেন তারাই উর্দুকে অন্যান্য মাতৃভাষার উপর চাপিয়ে দিতে চেষ্টা করতে থাকলেন। পাকিস্তানের অন্যান্য অঞ্চলে তা মেনে নিলেও বাংলা ভাষা তাঁর সেই প্রাচীন সংগ্রামী ঐতিহ্যের কারণে মেনে নিলোনা। পৃথিবীর মাতৃভাষা গুলোর মধ্য বাংলা ভাষার সম্ভবত একমাত্র ব্যতিক্রম যে, এ ভাষাটিকে তার প্রাচীন রূপ থেকেই মর্যাদা ও অধিকারের প্রশ্নে লড়াই করে আসতে হয়েছে। বাংলার প্রাচীন কালে সেন শাসনামলে বাংলা ভাষার চর্চার বিরুদ্ধে সুস্পষ্ট ধর্মীয় নিষেধাজ্ঞা জারি করে বলা হয়েছিল, বাংলা ভাষার চর্চা করলে রৌরব নামক নরকে যাবে।
জাতিসংঘ থেকে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষার মর্যাদা ও স্বীকৃতিঃ
মাতৃভাষার জন্য বাঙালি জাতির আত্মদান বৃথা যায়নি, ইউনেস্কো কর্তৃক আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসের স্বীকৃতির মধ্য দিয়ে আবারও সরব হয়ে উঠেছে। ইউনেস্কো কর্তৃক এ সিদ্ধান্তের মাধ্যমে বিশ্বের আড়াই হাজারের উপর ভাষাকে স্বীকৃতি দেয়া হয়েছে। এসেছে শুধু ভাষার স্বীকৃতি নয়; বরং আরো ব্যাপক স্বীকৃতির দ্যোতক। একুশের মধ্য বাঙালির ভাষাভিত্তিক সাপের বীজ। অমর একুশকে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়ার মধ্য দিয়ে বাঙালি প্রতীকি বিজয় নির্দেশিত হয়েছে। ভাষা শহীদের আত্মদানের আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি মিলেছে। একুশে ফেব্রুয়ারি চেতনা এখন শুধু মাতৃভাষার পরিধি অতিক্রম করে সকল পর্যায়ে মানবাধিকার বাস্তবায়ন করার একটি শক্তিশালী মাধ্যমে পরিণত হয়েছে।
উপসংহারঃ
বিদায়ী সহস্রাব্দ শেষ হবার আগেই আমাদের মাতৃভাষার দাবিতে আত্মহুতি দানকারী শহীদদের মিলেছে আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি। অবশ্য এর আগে এমন অনেক আরোত্যাগের আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি মিলেছে। কারণ সেগুলো ছিল উন্নত দেশগুলোর ঘটনা। আর মাতৃভাষার জন্য আমাদের সংগ্রাম ত্যাগ এর স্বীকৃতি মিলতে মিলতে পার হয়ে গেল ৪৮ বছরেরও বেশি সময়। হোক তবুও আমরা তা পেয়েছি। সর্বোচ্চ অঙ্গীকারও নিরলস সংগ্রামের মধ্য দিয়ে আমরা আমাদের মাতৃভাষাকে রক্ষা করেছি। স্বাধীনতা অর্জন করেছি এবং সর্বশেষ আমরা আমাদের মাতৃভাষা ও তার জন্য যে আত্মোৎসর্গ তার স্বীকৃতি পেয়েছি।
শেষ কথা
আশাকরি আমাদের এই পোস্ট এর সাহায্যে শহীদ দিবস অনুচ্ছেদ রচনা সম্পূর্ণ পেয়ে গেছেন।আপনারা এখান থেকে চাইলে শহীদ দিবস অনুচ্ছেদ রচনা আপনার ব্যক্তিগত জীবনে প্রয়োগ করতে পারেন। এবং পোস্টটি সবার সাথে শেয়ার করবেন যাতে। সবাই শহীদ দিবস অনুচ্ছেদ রচনা পেতে পারে।
আরও দেখুনঃ