আপনারা যারা সর্দি থেকে মুক্তির উপায় জানতে চান। তাদের জন্য আজকের এই পোস্ট এ সর্দি থেকে মুক্তির উপায় সম্পর্কে সকল তথ্য তুলে ধরা হয়েছে। তাই আজকের এই পোস্ট থেকে দেখে নিন সর্দি থেকে মুক্তির উপায়। বেশিরভাগ মানুষ সর্দি থেকে মুক্তির উপায় সম্পর্কে জানতে চাই। তারা যাতে সঠিকভাবে সকল তথ্য জানতে পারে। তাদের জন্য আজকের এই পোস্ট এ সর্দি থেকে মুক্তির উপায় উল্লেখ করা হয়েছে। এবং উল্লেখ করা হয়েছে কিভাবে সর্দি দূর করা যায়।
Contents
সর্দি থেকে মুক্তির উপায়
- মিষ্টি আলু, বিটের মূল, কয়েকটি বিশেষ ধরণের কুমড়ায় প্রচুর পরিমাণ বেটা-ক্যারোটিন থাকে যেটিকে আমাদের দেহ ভিটামিন এ’তে রূপান্তরিত করে। ভিটামিন এ আমাদের নাক এবং ফুসফুসের মিউকোসাল লাইনিংকে শক্ত রাখে যা নাগ ও ফুসফুসকে ইনফেকশনের হাত থেকে বাঁচায়।
- পাশাপাশি কমলা, আম, তরমুজসহ লাল ফল একই ধরণের কাজ করে।
- এছাড়া খাবারে যথেষ্ট পরিমাণ পেঁয়াজ ও রসুন থাকলেও ভাইরাস ও ব্যাকটেরিয়া সংক্রমণের সম্ভাবনা অনেক কমে যায়। পেঁয়াজ ও রসুনে একধরণের তেল থাকে যা ভাইরাস ও ব্যাকটেরিয়া সংক্রমণ থেকে দেহকে রক্ষা করে।
- এছাড়া ঠান্ডা বা সর্দি থেকে বাঁচার ক্ষেত্রে ভিটামিন সি’র ভূমিকা অনেক আগে থেকেই প্রমাণিত। ঠান্ডা পরিবেশে বসবাসকারী মানুষ উচ্চমাত্রায় ভিটামিন সি গ্রহণ করে সর্দি বা ঠান্ডার হাত থেকে বাঁচতে পারেন বলে প্রমাণিত হয়েছে।
- সূর্যের আলো বা অন্য কোনো উৎসের মাধ্যমে পর্যাপ্ত পরিমাণ ভিটামিন ডি গ্রহণও শরীরকে ঠান্ডার হাত থেকে বাঁচাতে সাহায্য করে।
শ্বাসতন্ত্রের সংক্রমণে ১৯৩০ এর দশকে ভিটামিন সি ছিল সবচেয়ে প্রচলিত চিকিৎসা। এটি সত্তরের দশকে এসে আরো বেশি জনপ্রিয় হয় যখন নোবেল বিজয়ী লিনাস পোলিং গবেষণা করে প্রমাণ করেন যে ভিটামিন সি ঠান্ডাজনিত রোগ উপশমে অনেকবেশি কার্যকর।
সম্প্রতি ককরেন গ্রুপের গবেষণায় দেখা গেছে যে, ঠান্ডা থেকে মুক্তিতে ভিটামিন সি’র ভূমিকা খুব বেশি নয়। এটি শরীরের জন্যে ক্ষতিকর নয় এবং প্রয়োজনের অতিরিক্ত ভিটামিন সি শরীর থেকে মুত্রের সাথে বেড়িয়ে যায়।
তবে জিঙ্ক ক্ষতিকর হয়ে দাড়াতে পারে যদি মাত্রা ছাড়িয়ে যায়। সুতরাং সেক্ষেত্রে চিকিৎসকের পরামর্শ মেনে চলাই ভালো।
সর্দি হাঁচি থেকে মুক্তির উপায়
নিচ থেকে জেনে নিন এমন কিছু ঘরোয়া উপায় যা সর্দি-কাশি, নাক থেকে জল গড়ান বা শ্লেষ্মা জমার সমস্যার উপশমে অত্যন্ত কার্যকরী।
১) হলুদ: হলুদে থাকা কারকুমিন নামের উপাদান বুক থেকে কফ, শ্লেষ্মা দূর করে বুকে ব্যথা, শ্বাসকষ্ট দ্রুত কমিয়ে দেয়। এর অ্যান্টি ইনফ্লামেটরি উপাদান গলা ও বুকের খুসখুসে অস্বস্থি, জ্বালা, ব্যথা দূর করতে সাহায্য করে।
২) আদা: এক টেবিল চামচ আদা কুচি এক জলে মেশান। এ বার এটি ঢাকনা দিয়ে ঢেকে ৫-১০ মিনিট ফুটিয়ে নিন। ঠাণ্ডা হলে এতে সামান্য মধু দিয়ে দিন। দিনে অন্তত তিনবার এই পানীয়টি পান করুন। আদার রস বুকের কফ বা শ্লেষ্মা শরীর থেকে বের করে দিতে সাহায্য করবে।
৩) নুন জল: বুকের সর্দি, কফ দূর করতে সবচেয়ে সহজ আর সস্তা উপায় হল নুন জল। নুন শ্বাসযন্ত্র থেকে কফ দূর করতে সাহায্য করে। এক গ্লাস সামান্য উষ্ণ জলের সঙ্গে এক চা চামচ নুন মিশিয়ে নিন। এটি দিয়ে দিনে দুই তিনবার গারগেল করুন।
৪) পেঁয়াজ: একই পরিমাণের পেঁয়াজের রস, লেবুর রস, মধু এবং জল একসঙ্গে মিশিয়ে ৫-৭ মিনিট ফুটিয়ে নিন। এই ভাবে সামান্য উষ্ণ এই জল দিনে অন্তত তিন থেকে চারবার পান করুন। উপকার পাবেন।
৫) লেবু এবং মধু: লেবু জলে এক চামচ মধু মিশিয়ে পান করুন। মধু শ্বাসযন্ত্রের ব্যাকটেরিয়া ধ্বংস করতে সাহায্য করে। এমনকি এটি বুক থেকে কফ বা শ্লেষ্মা দূর করে গলা পরিষ্কার করতে সাহায্য করে।
৬) অ্যাপেল সাইডার ভিনেগার: এক কাপ সামান্য উষ্ণ জলে দুই চা চামচ অ্যাপেল সাইডার ভিনেগার মিশিয়ে নিন। এর সঙ্গে এক চা চামচ মধু মিশিয়ে এই পানীয়টি দিনে অন্তত দু’ তিনবার পান করুন। মোটামুটি ৮-১০ দিন পান করুন। দ্রুত শ্লেষ্মার সমস্যা নিয়ন্ত্রণে চলে আসবে।
এলার্জি সর্দি থেকে মুক্তির উপায়
এলার্জি প্রতি রোধে এর জন্য প্রথমে যেটা আমাদের দরকার (প্রতিরোধীই প্রতিকার এর সব থেকে বড়) তো তার জন্য যে যে কারণে আমাদের এলারজি তৈরি হয় এবং শীত কালে এলার্জিক রহিনাইটিসি এর একটি বড় কানন হলো ধুলা বলি। পাশাপাশি ধোয়া ঠান্ডা এগুলো তো আছেই।
- প্রতিরোধ যেটা করতে হবে ধুলা বালি আমাদের এড়িয়ে চলতে হবে। বিষ্যেশ করে যারা এধরনের রোগে প্রায়ই একান্ত হয় তারা যদি চলা ফেরার ক্ষেত্রে -রাস্তা ঘাটে বা তাদের কাজের জায়গাতে মাস্ক ব্যবহার করা উচিত। এছাড়া আরো যাদের সমস্যা আছে যেমন নাক দিয়ে জল পড়া অতিরিক্ত বা অনাবাড়াটা হাঁচি হওয়া, নাকের ভিতরে বেথা করা এবং গলার ভেতরে বেথা করা-অনেক সময় আমরা দেখি যে নাকের সর্দি পেছন দিক দিয়ে গলায় আশার কারণেও গলার মধ্যে এক ধরনের প্রদাহ তৈরি হয়।
- এলার্জিক রহিনাইটিস কগুবিই মারাত্বক কোনো অসুখ না হলেও ইটা মানুষ কে অনেক যন্ত্রনা দেয় যার জন্য যারা এই রোগে আক্রান্ত হয়ে থাকে তাদের অতি শ্বেতা নাক, কান, গলা বিশেষআগের ক্রমে আন্টি স্টামিন জাতীয় ওষুধ ও স্টেরয়েড জাতীয় স্প্রে ব্যবহার করতে পারেন। এগুলো ব্যবহার করলে অনেক পরিত্রান পাবেন।
- কিন্তু কিছু কিছু আন্টি স্টামিন এনং নাকের স্টেরোয়েড যে স্প্রে গুলো আছে যেগুলো দ্বিধাদীন ব্যবহার করতে পারেন। এগুলো দীর্ঘদিন ব্যবহারে কোনো ক্ষতি নেই ও ব্যবহারে ও এগুলো আরাম দায়ক।
- তাই সব কিছুর কারণে প্রথমে আমাদের কে দেখতে হবে যারা এই এলার্জিক রহিনাইটিস পেশেন্ট তারা অবশই ধুলা বালি , ধোঁয়া, ঠান্ডা এই সব বিষয় গুলো এড়িয়ে থাকতে হবে বা সবতারকা থাকতে হবে বা অনেক সময় এমন ও আছে কারুর কোনো গন্ধ তে ও এলার্জিক তৈরি হয়।
- আর আমরা অনেক সময় যেটা করি যে শীত আসলে যে পুরোনো লেপ তোষক সেটা ভালো করে পরিস্কার না করেই আমার এটা ব্যবহার করি যার ফলে আমরা এধরণের এলার্জিক রহিনাইটিস এর রোগ এ আক্রান্ত হতে পারি। সো এক্ষেত্রে আমাদের অবশই এই সব বেপারে খুব স্বতর্ক থাকতে হবে। যে ঘর ও ঘরের সমস্ত কিছু পরিষ্কার রাখা এবং আপনার পারিপার্শিক ও পরিষ্কার রাখা।
সর্দি জ্বর থেকে মুক্তির উপায়
যে কেউ খুব সামান্য কারণেই ঠান্ডা বা সর্দিজ্বরে আক্রান্ত হতে পারে যে কেউ। সাধারণত কয়েকদিনের মধ্যেই মানুষের সর্দিজ্বর ভাল হয়ে যায়। তবে কয়েকটি উপায়ে স্বাভাবিকের চেয়ে খুব দ্রুত সময়ে সর্দিজ্বর ভাল করা সম্ভব বলে বলছেন চিকিৎসকরা।
- ঘুম মানুষের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়। কাজেই ঠান্ডা বা সর্দিজ্বরের সময় বিশ্রাম নিলে বা বেশি ঘুমালে দ্রুত আরোগ্য লাভ সম্ভব।
- সর্দিজ্বরের সময় উষ্ণ পরিবেশে থাকা বা উষ্ণ পোশাক পড়ে থাকলে ফলে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি পায়।
- প্রচুর পরিমাণ পানি বা ফলের রস পানের মাধ্যমে পানিশূন্যতা রোধ করলে ঠান্ডা থেকে দ্রুত আরোগ্য লাভ করা যেতে পারে।
- ঠান্ডার একটি সাধারণ উপসর্গ গলা ব্যাথা। লবণ পানি দিয়ে গার্গল করা অথবা লেবু এবং মধু দিয়ে হালকা গরম পানীয় তৈরি করে পান করলে গলা ব্যাথা দ্রুত উপশম হতে পারে।
হাঁচি কমানোর ঘরোয়া উপায়
- নিয়মিত সাইট্রাস ফল খাওয়া ভালো। লেবু, কমলা, জাম্বুরা ও আঙ্গুর ফল ঘন ঘন হাঁচির সমস্যা থেকে মুক্তি দিতে পারে। হারবাল চায়ের সাথে লেবুর রস মিশিয়ে পান করলে ইতিবাচক ফল পাওয়া যাবে।
- পিপারমেন্ট অয়েলের অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল উপাদান শুধু হাঁচিই প্রতিরোধ করে না, নাকের সমস্যা থেকেও মুক্তি দিতে পারে; ফুটন্ত পানির মধ্যে কয়েক ফোঁটা পিপারমেন্ট অয়েল মিশিয়ে নিয়ে। এরপর মাথা একটি বড় তোয়ালে দিয়ে ঢেকে ভাঁপ নিতে হবে। এর ফলে নাক পরিষ্কার হবে এবং সহজে শ্বাস নিতে পারবেন।
- অনবরত হাঁচি দেয়ার সমস্যাটির সমাধানের সবচেয়ে ভালো উপায় হচ্ছে বিছুটি গাছ। যেকোনো ধরনের অ্যালার্জিক প্রতিক্রিয়া এবং অ্যালার্জির কারণে সৃষ্ট হাঁচি থেকে মুক্তি দিতে পারে বিছুটি পাতা। ফুটন্ত পানিতে বিছুটি পাতা দিয়ে চা তৈরি করে দিনে দুই-তিনবার এই চা পান করলে উপকার হবে।
- অ্যান্টিবায়োটিক ও অ্যান্টিভাইরাল উপাদান সমৃদ্ধ হওয়ায় গোলমরিচ বিভিন্ন প্রকারের শ্বসনতন্ত্রের সমস্যা মোকাবেলায় এবং হাঁচি নিরাময়েও সাহায্য করে। কুসুুম গরম পানিতে গোলমরিচের গুঁড়া মিশিয়ে দিনে দুই-তিনবার পান করুন। গারগলও করা যায়।
- নাকের সমস্যার সমাধানের জন্য আদা প্রাচীনকাল থেকেই ব্যবহার হয়ে আসছে। ঘন ঘন হাঁচি দেয়ার সমস্যা থেকে মুক্তি পাওয়ার জন্য আদাকুঁঁচি চিবানো যায়। এ ছাড়াও এক-দুই চামচ আদার রস প্রতিদিন পান করলে ফল পাওয়া যায়।
- রসুনের কোয়ার তীব্র ঘ্রাণ হাঁচির সমস্যা দূর করতে সাহায্য করতে পারে।
বাচ্চাদের সর্দি থেকে মুক্তির উপায়
শিশুদের সর্দি বা ফ্লুর সমস্যা বেশি হয়ে থাকে। আর সর্দি-কাশি হলে সহজে সারতেই চায় না। এ জন্য ঘুমের ব্যাঘাতও হয়।শিশুদের এই সর্দি সারানোর রয়েছে ঘরোয়া কিছু উপায়-
১. সর্দি-কাশি সারাতে আদা এবং মধু খাওয়াতে পারেন। আদার রস করে মধুর সঙ্গে মিশিয়ে দিনে দুই থেকে তিনবার খাওয়ান।
২. সর্দি-কাশি সারাতে সরিষার তেল খুব উপকারী। দুই কোয়া রসুন এবং কিছু কালোজিরা বীজ দিয়ে সরিষার তেল গরম করুন। এই তেল দিয়ে আপনার শিশুর পায়ের পাতা, পিঠ, হাতের তালু এবং বুকে মালিশ করুন।
৩. নারিকেল তেলে অল্প কর্পূর দিয়ে গরম করুন। শিশুর বুকে, পিঠে এবং গলায় মাখলে উপকার পাবেন।
৪. সর্দি সারাতে দুধে জায়ফল খুব ভালো কাজ করে। কয়েক চামচ দুধে এক চিমটি জায়ফল পাউডার দিয়ে একবার ফোটান এবং ঠাণ্ডা করে শিশুকে খাওয়ান।
সর্বশেষ কথা
আশা করি আজকের পোস্ট এর সাহায্যে সর্দি থেকে মুক্তির উপায় সম্পর্কে জানতে পেরেছেন। আপনাদের যদি আজকের এই পোস্ট গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে হয়। তাহলে অবশ্যই সবার সাথে শেয়ার করবেন। আরো নতুন তথ্য পেতে সর্দি থেকে মুক্তির উপায় জানতে আমাদের ওয়েবসাইট ভিজিট করবেন।
আরও দেখুনঃ