কুয়েত ছোট্ট একটি আরব দেশ যা নয়টি দ্বীপ নিয়ে গঠিত। পশ্চিম এশিয়ার এ দেশটির অবস্থান আরবের উত্তরাঞ্চলে, পারস্য উপসাগরের প্রান্তে। কুয়েতের উত্তর দিকে সৌদি আরব এবং উত্তর পশ্চিমে ইরাক অবস্থিত। দেশটির মোট আয়তন ১৭,৮১৮ বর্গ কিলোমিটার বা ৬,৮৮০ বর্গমাইল। এদেশের মোট জনসংখ্যা প্রায় ৪০ লক্ষের কাছাকাছি। এ দেশের রাষ্ট্রীয় ধর্ম ইসলাম ও ভাষা আরবি যা সকলে মেনে চলে।
এত ছোট রাষ্ট্র ও জনসংখ্যায় কম হওয়া সত্ত্বেও অন্যান্য রাষ্ট্রের তুলনায় এই রাষ্ট্র অনেক উন্নত। শুধু রাষ্ট্রই নয় এদেশের মুদ্রার মান অনেক বেশি তা ডলার বা পাউন্ড এর থেকেও বেশি মুদ্রার নাম দিনার ।এদেশে স্থায়ী জনসংখ্যা ৩০ শতাংশ বা তার থেকে কিছু বেশি এবং প্রবাসী প্রায় ৭০ শতাংশ। তাদের উন্নত কর্মসংস্থানের পেছনে প্রবাসীদের অনেক অবদান রয়েছে।
তাদের এই বিলাসবহুল জীবন যাপন উন্নত করার জন্য বিভিন্ন কাজের নিয়োগ দিয়ে থাকে। তাই বিভিন্ন দেশ থেকে নিজের কর্মসংস্থানের জন্য এজেন্সি বা দালালের মাধ্যমে ভিসার জন্য আবেদন করে অনেকেই। হয়তো আপনি ভিসার জন্য আবেদন করেছেন। যার মাধ্যমে আপনি ভিসা পেয়েছেন সে আপনার সাথে প্রতারণা করতে পারে। ভিসা হাতে পাওয়ার পর তা চেক করে নেয়া উচিত। আমরা এই পোস্টে কুয়েতের ভিসা চেক করার নিয়ম দেখেয়েছি
Contents
কুয়েত কোম্পানি ভিসা
আপনি যদি নিজের কর্মসংস্থানের জন্য কুয়েতে ভিসার জন্য আবেদন করে থাকেন। তাহলে আজকের এই পোস্ট আপনার অনেক উপকারে আসবে। কারণ আপনি হয়তো কোন দালালের মাধ্যমে ভিসার আবেদন করেছেন। কোন কারণবশত সন্দেহ হতে পারে আদৌ কি এই ভিসা অরিজিনাল কিনা।
সতর্কতা একজন সচেতন নাগরিকের দায়িত্ব। আপনি কিছুটা সময় দিয়ে ঘরে বসেই জেনে নিতে পারবেন। আপনার হাতে থাকা ভিসাটি অরিজিনাল কিনা। এর জন্য আপনার এই পোস্ট সম্পূর্ণ পড়তে হবে। এখানে ভিসা চেক করার নিয়মাবলী তুলে ধরা হয়েছে। এই পদ্ধতিগুলো অবলম্বন করে আপনি আপনার হাতে থাকা ভিসা চেক করে নিতে পারবেন।
কুয়েত ভিসা চেক
ধরুন আপনি আপনার কর্মসংস্থানের উদ্দেশ্যে কুয়েতের জন্য দালালের মাধ্যমে ভিসা করিয়েছেন। আপনার কাছে সে অনেক বিশ্বস্ত। এইজন্য তাকে বিশ্বাস করে সমস্ত টাকা দিয়ে দিয়েছেন। বিদেশে ভ্রমণের পূর্বে আপনাকে ভিসা প্রদান করা হয়েছে এবং নির্দিষ্ট সময়ের জন্য ভিসার মেয়াদ রয়েছে।
আপনি সমস্ত কিছু সংগ্রহ করে কুয়েতের উদ্দেশ্যে রওনা হলেন। যখন আপনি এয়ারপোর্টে পৌঁছাবেন তখন আপনার পাসপোর্ট সহ ভিসা চেক করা হবে। যদি কোন ভাবে ভিসাটি নকল হয়ে থাকে তাহলে আপনাকে এয়ারপোর্টে জব্দ করা হবে। এবং আপনি অনেক সমস্যার সম্মুখীন হবেন।
কেননা ভিসা হলো প্রবেশ করার মাধ্যম। আপনি কুয়েতে কর্মসংস্থানের উদ্দেশ্যে যে তথ্যগুলি প্রদান করে ভিসা তৈরি করেছেন। এর মাধ্যমেই আপনি কুয়েতে যেতে পারবেন। আপনার ভিসাটি যদি নকল হয়। তাহলে অবশ্যই এয়ারপোর্টে আটকে দেয়া হবে। তাই একজন সচেতন নাগরিকের কর্তব্য নিজে থেকেই সবকিছু যাচাই-বাছাই করে নেওয়া, হোক না বিশ্বস্ত দালাল।
কুয়েত ভিসা চেক করার নিয়ম
ভিসার মাধ্যমে একজন ব্যক্তি অন্য একটি রাষ্ট্রে যাওয়ার বৈধতা পায়। ভিসা হল অন্য রাষ্ট্রের প্রবেশ করার মাধ্যম। যা একটি দেশ কোন বিদেশী নাগরিককে ঐ দেশের প্রবেশ বা অবস্থানের জন্য প্রদান করে। আপনি হয়তো কর্মসংস্থানের বা ট্যুরিস্টের উদ্দেশ্যে আবেদন করেছেন। আর আপনি তা পেয়ে গেছেন। তা যদি অরিজিনাল না হয়।
তাহলে আপনাকে বাংলাদেশ এয়ারপোর্ট আটকে দেওয়া হবে। বা কোন ভাবে আপনি যদি নকল ভিসা নিয়ে যেতে পারেন। তবে আপনাকে ওই দেশে (যে দেশের ভিসা আপনার হাতে রয়েছে) সেই এয়ারপোর্টে অবৈধ হিসেবে গণ্য করা হবে এবং আপনাকে জব্দ করা হবে। আপনি তখন অনেক সমস্যার সম্মুখীন হবেন। তাই ভিসা হাতে পাওয়ার পর তা অবশ্যই চেক করে নেয়া উচিত। আমরা এই পোস্টে কুয়েত ভিসা চেক করার নিয়ম দেখিয়েছি।
কুয়েত ভিসা চেক অনলাইন
উন্নত প্রযুক্তি আমাদের জীবনযাত্রায় অনেক সহজ করে তোলার পাশাপাশি অনেক বিপদ তৈরি করে। কিছু প্রতারক চক্র রয়েছে যারা অন্যের টাকা আত্মসাৎ করার জন্য উন্নত প্রযুক্তি ব্যবহার করে বিভিন্ন মাধ্যম ঠকিয়ে যাচ্ছে। এর মাঝে যারা দালালের মাধ্যমে ভিসার জন্য আবেদন করে অনেকেই প্রতারিত হয়। অনেক দালাল রয়েছে যারা কিনা নকল ভিসা প্রদান করে সাধারণ জনগণের টাকা হাতিয়ে নেয়। তাই সতর্কতা অবলম্বন করার জন্য আপনার হাতে থাকাই স্মার্টফোন দিয়ে ভিসা চেক করে নিন। এই পোস্টে দেখানো হয়েছে কুয়েতের ভিসা কিভাবে চেক করতে হয়।
পাসপোর্ট নাম্বার দিয়ে কুয়েত ভিসা চেক করার নিয়ম
আপনার ভিসা approved হয়েছে কিনা বা অ্যাক্টিভ রয়েছে রয়েছে কিনা তা জানতে পারবেন এই পদ্ধতি অবলম্বন করে। এই সাইডে প্রবেশ করার পর সাইটের ভিসা ফরমটি পূরণ করতে হবে। এক্ষেত্রে ভিসা আপনার হাতে থাকতে হবে। কুয়েতে পাসপোর্ট নাম্বার দিয়ে ভিসা চেক করার কোন মাধ্যম নেই।
আপনার প্রথমে ভিসা সংগ্রহ করতে হবে এবং ভিসা ফর্মটি পূরণ করতে হবে। ফর্মটি পরম করার পর আপনার নামে যদি ভিসা লেগে থাকে তাহলে approved লেখা আসবে। এর মানে আপনার নামে ভিসা হয়েছে এবং ভিসাটি একটিভ রয়েছে। ফরম পূরণ করার পর invalid number আসলে আপনাকে ধরে নিতে হবে আপনাকে জাল ভিসা প্রদান করা হয়েছে। কারণ এই সাইটটি Government অনুমোদিত তাই এখানে ভুল ইনফরমেশন পাওয়ার সম্ভাবনা নেই।
আপনি যদি আপনার ফোনের ব্রাউজারে গিয়ে rnt.moi.gov.kw লিখে সার্চ করেন তাদের অফিসিয়াল ওয়েবসাইট পেয়ে যাবেন। এক্ষেত্রে আপনার কয়টি স্টেপ পার করতে হবে। তাই ওইসব বিষয়ে না গিয়ে এই পোস্টে থাকা লিংকে প্রবেশ করুন সরাসরি ভিসার ফর্মটি পেয়ে যাবেন। সেখানে সঠিক তথ্য দিয়ে আপনি দেখে নিন আপনার ভিসা approve হয়েছে কিনা।
- প্রথম ধাপ – আপনার ফোনে থাকা যেকোনো একটি ব্রাউজার সিলেক্ট করুন ব এই লিংক কপি করে ব্রাউজারে পেস্ট করে অনুসন্ধান করুন। বা এই rnt.moi.gov.kw লিংকে প্রবেশ করুন
- দ্বিতীয় ধাপ – সাইটে প্রবেশ করার পর এখন আপনার ইনফরমেশন দেওয়ার পালা। নিচের দিকে খেয়াল করুন visa application status ফর্মটি রয়েছে এখানে আপনার তথ্য প্রদান করতে হবে।
- তৃতীয় ধাপ – ফর্মটিতে রয়েছে visa application number এখানে আপনার হাতে থাকা ভিসার নাম্বারটি এই খালি ঘরে বসান। এরপর ক্যাপচা টেক্সট নামে একটি খালিঘর রয়েছে তার নিচে কয়েক ডিজিটের কোড রয়েছে যা এই ঘরে বসাতে হবে।
- চতুর্থ ধাপ – ফর্মটি পূরণ করার পর নিচের দিকে খেয়াল করুন submit নামে একটি অপশন রয়েছে সেখানে প্রবেশ করুন।
সাবমিট বাটন প্রবেশ করার পর যদি approve লেখা আসে তাহলে আপনার নামের ভিসা লেগেছে। সৌদি ভিসা চেক করার ক্ষেত্রে সকল ইনফরমেশন দেখা যায় তবে কুয়েতের ভিসা চেক করার ক্ষেত্রে শুধু approve লেখা আসে। তাই এক্ষেত্রে approve লিখা আসলে আপনার নামে ভিসা হয়েছে এবং এটি একটিভ রয়েছে।
শেষ কথা
আশা করা যায় কিভাবে ভিসা চেক করবেন তা জানতে পেরেছেন। যদি ভিসা সম্পর্কিত আরো কোন তথ্য জানতে চান তাহলে আমাদের কমেন্ট বক্সে জানাতে পারেন। আমরা যতটুকু সম্ভব আপনাদেরকে ভিসা সম্পর্কিত তথ্য তুলে ধরার চেষ্টা করব।
আরও দেখুনঃ