আপনারা যারা খুশখুশে কাশি দূর করার উপায় জানতে চান। তাদের জন্য আজকের এই পোস্ট এ খুশখুশে কাশি দূর করার উপায় সম্পর্কে সকল তথ্য তুলে ধরা হয়েছে। তাই আজকের এই পোস্ট থেকে দেখে নিন খুশখুশে কাশি দূর করার উপায়। বেশিরভাগ মানুষ খুশখুশে কাশি দূর করার উপায় সম্পর্কে জানতে চাই। তারা যাতে সঠিকভাবে সকল তথ্য জানতে পারে। তাদের জন্য আজকের এই পোস্ট এ খুশখুশে কাশি দূর করার উপায় উল্লেখ করা হয়েছে। এবং উল্লেখ করা হয়েছে কিভাবে খুশখুশে কাশি দূর করা যায়।
Contents
খুশখুশে কাশি দূর করার উপায়
নিচে আমরা তুলে ধরেছি খুশখুশে কাশি দূর করার উপায়। আপনি যদি নিচের জিনিস গুলো ভাল করে পড়েন। তাহলে বুজতে পারবেন খুশখুশে কাশি দূর করার উপায়।
১. মধু : কাশি উপশমে ঘরোয়া চিকিৎসা হিসেবে মধুর জুড়ি নেই। মধু কাশি-কফ কমাতে সাহায্য করে। কখনও কখনও ওষুধের চেয়েও ভালো কাজ করে মধু। মধু কাশি বা ঠান্ডার জন্য আদর্শ ওষুধ হলেও এক বছর বয়সের নীচে শিশুদের মধু খাওয়ানো একেবারেই উচিত নয়।
২. বাসক পাতা : বাসক পাতা পানিতে সেদ্ধ করে, সেই পানি ছেঁকে নিয়ে কুসুম গরম অবস্থায় খেলে কাশি উপশম হয়। দৈনিক সকালে এই পানি খেতে হবে। বাসক পাতার রস প্রতিদিন সন্ধ্যায় খেলে ভালো। ২-৩ দিনেই এর খুব ভালো ফল পাওয়া যায়। তেতোভাব কমাতে রসের সাথে সামান্য চিনি মেশাতে পারেন।
৩. তুলসী পাতা : তুলসী পাতা থেঁতো করে এতে কয়েক ফোটা মধু মিশিয়ে মিশ্রণ তৈরী করতে হবে। এই মিশ্রণটি দৈনিক ২/৩ বার খেলে কাশি ভালো হয়।
৪. আদা : আদা ছোট ছোট টুকরা করে তার সাথে লবণ মিশিয়ে নিয়ে কিছুক্ষণ পর পর খেতে হবে। এই পদ্ধতি কাশি দূর করতে বেশ কার্যকরী। তাছাড়া আদা চা করে খেলেও কাশিতে উপকার পাবেন।
৫. গরম দুধে হলুদের মিশ্রণ : দুধকে গরম করে এর মধ্যে অল্প হলুদ মেশাতে হবে। এই হলুদমিশ্রিত দুধ কাশি দূর করতে বেশ উপকারী। হলুদ আমাদের সর্দি কাশি দূর করতে সাহায্য করে।
৬. লবঙ্গ : কাশি হলে মুখে একটা লবঙ্গ রেখে মাঝেমধ্যে একটু চাপ দিয়ে রস বের করে গিলে ফেলুন। লবঙ্গের রস গলায় আরাম দেবে, জীবাণু দূর করবে।
৭. মেন্থল ক্যান্ডি : মেন্থল দিয়ে তৈরী ক্যান্ডি বা চকোলেট কাশির জন্য উপকারী। এসব ক্যান্ডি শক্ত কফ নরম করে গলা থেকে কফ বের করতে ও কাশি কমাতে পারে।
৮. গার্গল করা : গার্গল করলে কাশি ও গলা ব্যথা দুই-ই কমে। এক গ্লাস কুসুম গরম পানিতে আধা চা চামচ লবণ মিশিয়ে ১০/১৫ মিনিট ধরে গার্গল করুন। বিরতি দিয়ে দিয়ে কয়েকবার করুন। এটি কাশি কমাতে বেশ কার্যকর ঘরোয়া পদ্ধতি।
খুশখুশে কাশি দূর করার ঘরোয়া উপায়
খুসখুসে কাশির কারণে সারারাত ঘুমাতে পারেন না। এই সময়ে কাশির সঙ্গে গলাব্যথা ও শ্বাসকষ্টও হতে পারে। ঘরোয়া উপায়েও এই সমস্যা থেকে পরিত্রাণ পাওয়া সম্ভব। আসুন জেনে নিই খুসখুসে কাশি সারানোর ঘরোয় উপায় –
১. সর্দি, কাশি ও ঋতু পরিবর্তনের জ্বর থেকে মুক্তি দিতে পারে এলাচ। অ্যান্টি-অক্সিডেন্টে ভরা এলাচ জীবাণুনাশকও৷ গলাব্যথা এবং শুকনো কাশি হলে নিরাময়ে এলাচ খেতে পারেন। এ জন্য এক কাপ পরিমাণে পানি নিন। পানি হালকা গরম হলে তাতে মধু এবং বেশ কয়েকটি ছোট এলাচ দিন৷ ফুটে গেলে এলাচ ছেঁকে ওই পানি পান করুন৷
২. ঠাণ্ডা ও শুকনো কাশি সমস্যায় মধু খেতে পারেন। ছোট থেকে বড় সবার জন্যই মধু উপকারী। এক টেবিল চামচ মধু সারা দিনে তিন থেকে চারবার খেতে পারেন। শুধু মধু খেতে পারেন, আবার কখনও হালকা গরম পানি কিংবা চায়ের সঙ্গে।
৩. সর্দি, কাশি দূর করতে তুলসি পাতার রস খুবই উপকারী। শিশুদের জন্য কয়েকটি তাজা তুলসি পাতার রসের সঙ্গে একটু আদার রস ও মধু দিয়ে খেলে খুব উপকার পাবেন।
তুলসি পাতা শুকনো কাশির জন্য খুবই কার্যকরী। সকালে খালি পেটে তিন থেকে চারটি তুলসি পাতা খেতে পারেন। তা ছাড়া তুলসি পাতা ফুটিয়ে চা তৈরি করে পান করতে পারেন।
৪. নিয়মিত দিনে তিন থেকে চার বার আদা দিয়ে পানি ফুটিয়ে সেই পানি ছেঁকে নিন। এর পর লবণ মিশিয়ে কুলিকুচি করুন। গলায় খুসখুসে ভাব দূর করতে আদা চাও খেতে পারেন।
খুশখুশে কাশি দূর করার ঔষধ
সর্দি কাশি হলেই এখন আর ঘড়ির কাঁটা গুনে অ্যান্টিবায়োটিক ওষুধ খাওয়া জরুরি নয়। সেক্ষেত্রে সবচেয়ে বড় সহায়ক হতে পারে মধু। নতুন এক গবেষণায় এমন তথ্য উঠে এসেছে। সেখান থেকে জানা যায় কাশির সমস্যায় ভুগছেন তাদের চিকিৎসায় অব্যর্থ ভূমিকা রাখতে পারে এই মধু। যেখানে অ্যান্টিবায়োটিক এতো ভাল কাজ করেনা।
তবে কাশি বেশিরভাগ সময় দুই থেকে তিন সপ্তাহের মধ্যে আপনা আপনি ঠিক হয়ে যায়। চিকিৎসকদের উদ্দেশ্যে স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের এই পরামর্শ অতিরিক্ত অ্যান্টিবায়োটিক ব্যবহারের সমস্যা মোকাবিলায় সাহায্য করবে বলে আশা করা হচ্ছে। কেননা অতিরিক্ত অ্যান্টিবায়োটিক ওষুধের প্রয়োগের ফলে মানুষের শরীর ওষুধ প্রতিরোধী হয়ে পড়ে। ফলে অনেক ধরণের ইনফেকশন সারিয়ে তোলা কঠিন হয়ে যায়।
দীর্ঘদিনের কাশি দূর করার উপায়
কাশি যদি পনেরো দিনের বেশি সময় ধরে থাকে তাহলে তাকে ক্রনিক কফ বা দীর্ঘদিনের কাশি হিসেবে বিবেচনা করা যায়। নিচ থেকে দেখে নিন দীর্ঘদিনের কাশি দূর করার উপায় –
- শরীর যাতে পানিশূন্য না হয়, সেজন্য পর্যাপ্ত তরল খাবার খেতে হবে
- গরম লবণ-পানি দিয়ে কুলি করা
- আদা-মিশ্রিত পানি খাওয়া
- মধু খেলে কাশির মাত্রা কমে আসে
- কাশির সিরাপ হিসেবে— ডেক্রমিথোফেন ও সিওডোইফিড্রিন গ্রুপের সিরাপ খেতে পারেন।
বাচ্চাদের খুশখুশে কাশি দূর করার উপায়
শীতে শিশুদের প্রতি নিতে হয় বাড়তি যত্ন। এ সময় শিশুদের জ্বর, ঠান্ডা-কাশি হওয়ার প্রবণতা বেড়ে যায়। জ্বর-ঠান্ডা যদিও কয়েক দিনের মধ্যেই সেরে যায়। তবে সমস্যা ঘটে কাশির ক্ষেত্রে। কিছুতেই সারতে চায় না কাশি। অনেক সময় তো শিশুর কাশির জন্য বাবা-মাও ঘুমাতে পারেন না। কাশির সিরাপ খেয়েও অনেক সময় তা সারতে চায় না। এর থেকে পরিত্রাণ পেতে শিশুকে খাওয়াতে পারেন ঘরোয়া কিছু দাওয়াই। নিচ থেকে জেনে নিন বাচ্চাদের খুশখুশে কাশি দূর করার উপায় –
- শিশুর বয়স যদি দুই বছরের কম হয়; তাহলে তার বালিশের ওপর কয়েক ফোঁটা ইউকেলিপটাস তেলের ড্রপ ঢেলে দিন। এতে শিশুর নাসারন্ধ্র খুলে যাবে।
- খুসখুসে কাশি হলে শিশুকে জিংক লজেন্স প্রতি ২-৩ ঘণ্টায় একবার দিতে পারেন। এটি খেলে কাশি কমে আসবে।
- শিশুর কাশি হলে তাল মিছরি চুষলেও উপকার পাওয়া যায়।
- কাশি হলে আপনার শিশুকে এক বাটি গরম সবজির স্যুপ বা চিকেন স্যুপ খাওয়ান। এটি কাশি বা গলা ব্যথা থেকে আরাম প্রদান করবে।
- মধুর সঙ্গে সামান্য গোলমরিচ গুঁড়ো খাওয়াতে পারেন শিশুকে। এতে দ্রুত সারবে শিশুর কাশি।
- মধুর সঙ্গে মিশিয়ে আদা বাটাও খাওয়াতে পারেন শিশুকে। আদার অ্যান্টি-হিস্টামাইন গুণ অ্যালার্জির চিকিৎসায় অন্যতম। দীর্ঘস্থায়ী কাশি নিরাময় করতেও সাহায্য করে এ টোটকা।
- রাতে যদি শিশুর কাশি বেড়ে যায়; তাহলে কয়েকটি বালিশ দিয়ে তার মাথা উঁচু করে শুইয়ে দিন। কাশি কমে যাবে।
- সরিষার তেল গরম করে এর মধ্যে সামান্য রসুন থেঁতো করে মিশিয়ে রাখুন কিছুক্ষণ। এরপর ওই তেল দিয়ে শিশুর গলা, বুক, পিঠ, হাতের তালু ও পায়ের পাতায় এটি মালিশ করুন। ঠান্ডা-কাশি দ্রুত সেরে যাবে এই উপায়ে।
সর্বশেষ কথা
আশা করি আজকের পোস্ট এর সাহায্যে খুশখুশে কাশি দূর করার উপায় সম্পর্কে জানতে পেরেছেন। আপনাদের যদি আজকের এই পোস্ট গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে হয়। তাহলে অবশ্যই সবার সাথে শেয়ার করবেন। আরো নতুন তথ্য পেতে খুশখুশে কাশি দূর করার উপায় জানতে আমাদের ওয়েবসাইট ভিজিট করবেন।
আরও দেখুনঃ