আজকে আমরা কথা বলবো কাজু বাদামের উপকারিতা ও অপকারিতা নিয়ে। বাঙালি কাজু বাদাম প্রিয় মানুষ। তাই বাংলাদেশের বেশিরভাগ মানুষ কাজু বাদাম খেতে ভালোবাসে। তাই অনেকে ইন্টারনেটে কাজু বাদামের উপকারিতা ও কাজু বাদাম খাওয়ার সঠিক সময় জানতে চেয়ে অনুসন্ধান করে। আজকের এই পোস্টে আমরা শিশুদের কাজু বাদাম খাওয়ার উপকারিতা উল্লেখ করেছি। তাই আজকের এই পোস্ট থেকে কাজু বাদামের উপকারিতা জেনে নিন।
Contents
কাজু বাদামের উপকারিতা ও অপকারিতা
কাজু বাদামে মধ্যে রয়েছে বিভিন্ন ভিটামিন। তাই এটা আমাদের শরীর গঠনে ভূমিকা রাখে। তাই আমাদের মাঝে অনেকেই আছে যারা সব সময় কাজু বাদাম খেতে ভালোবাসে। তাদের জন্য আজকের এই পোস্ট এ কাজু বাদাম খাওয়ার উপকারিতা তুলে ধরা হয়েছে।
- টিউমার প্রতিরোধে কাজু বাদামের ভূমিকা অপরিসীম। এর অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ক্যান্সার সেলের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তুলতে সাহায্য করে।
- কাজু বাদামের ম্যাগনেসিয়াম ব্লাড প্রেসারকে নিয়ন্ত্রণে আনতে সক্ষম। এ কারনে ব্লাড প্রেসার আক্রান্ত রোগীরা খাদ্য তালিকায় কাজু বাদাম রাখতে পারেন।
- সুস্থ হার্টের জন্য কাজুর বিকল্প ভাবার কোনো কারন নেই।
- এই খাবারে এক ধরনের মোনোআনস্যাচুরেটেড ফ্যাটি অ্যাসিড থাকে যার নাম ওলিসিক। ওলিসিক শরীরের খারাপ কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণে আনতে সহায়তা করে।
- কাজু বাদামে প্রচুর পরিমাণে কপারের উপস্থিতি রয়েছে। কপার চুলের গোড়াকে শক্ত করার পাশাপাশি চুলের ঔজ্জ্বল্য বৃদ্ধিতে সহায়তা করে। (আরও পড়তে পারেনঃ চুল পড়া রোধে ৫ টি সহজ ঘরোয়া সমাধান)
- কপার শরীরে কিছু গুরুত্বপূর্ণ এনজাইমের পরিমাণ বৃদ্ধি করে চুলের রঙকে আরো গাঢ় করে এবং স্থায়ীত্ব প্রদান করে।
- কাজু বাদামের ভাইরাস প্রতিরোধে খুবই গুরত্বপূর্ণ। তাই যাদের রোগ্রতিরোধ ক্ষমতা কম তারা খাদ্যাভাসে এই বাদামকে যুক্ত করতে পারেন।
এছাড়াও, স্মৃতি শক্তি বৃদ্ধিতে কাজু বাদামের ভূমিকা অনস্বীকার্য। শিক্ষার্থীদের মেধাশক্তি বৃদ্ধিতে এবং বয়স্কদের স্মৃতিশক্তি বাড়ানোর জন্য চিকিৎসকরা কাজুবাদাম খাওয়ার পরামর্শ দিয়ে থাকেন। কাজুবাদামের ম্যাগনেসিয়াম মস্তিষ্কের টিস্যুর শক্তি বাড়িয়ে তুলতে বিশেষ ভূমিকা পালন করে। কাজুবাদাম কে আমরা ব্রেনের পাওয়ার বুস্টারও বলে থাকি।
কাজু বাদাম খাওয়ার নিয়ম
কেক, চকোলেট, পেস্টি, পায়েস, আচার ইত্যাদিতে স্বাদ বৃদ্ধি করার জন্য কাজু বাদাম ব্যাবহার করে থাকি। তবে কাজু বাদাম খাওয়ার ক্ষেত্রে বয়স ও শারীরিক অবস্থা ভেদে কিছু নিয়ম মেনে চললে এর পুষ্টিগুণ পরোপুরি পাওয়া যেতে পারে।
১। দুই বছরের কম ছোট বাচ্চাদের জন্য
এই বয়সের বাচ্চদের কাজু বাদাম খাওয়ানোর ক্ষেত্রে সাবধানতা অবলম্বন করতে হয়। এটি তাদের গলায় আটকে যেতে পারে। তাদেরকে অন্য খাবারের সাথে কাজু বাদাম মিশিয়ে খাওয়ানো যেতে পারে। প্রতিদিন ১ বার বা সপ্তাহে ৩ বার এবং একসাথে ১০-১৫ বাদাম খাওয়ানো যেতে পারে।
২। দুই বছরের চেয়ে বড় বাচ্চাদের জন্যঃ
এই বয়সের বাচ্চারা একেকবারে ১৫-২০ টি বাদাম খেতে পারে। প্রতিবার যদি তারা প্রায় ৩০ টি বাদাম বা ৫০ গ্রাম বাদাম খায়, তাহলে তাদের প্রতি সপ্তাহে সর্বোচ্চ 3 বার খেতে দেওয়া উচিত।
৩। গর্ভবতী মায়েদের জন্যঃ
গর্ভবতী মহিলাদের জন্য প্রতিদিন ১০ গ্রাম -৫০ গ্রাম কাজু বাদাম খাওয়া ভালো যা ৩৫-৬৫ টি বাদামের সমতুল্য। যদি বেশি খাওয়া হয়ে যায়, তাহলে আপনার সপ্তাহে মাত্র ২-৩ বার করে খাওয়া উচিত। এই ক্ষেত্রে আপনি আপনার ডাক্তারের পরামর্শ অনুসারে বাদাম খাওয়ার নিয়ম তৈরি করে নিতে পারেন।
৪। ডায়াবেটিস রোগী ও অন্যদের জন্যঃ
বয়স্কদের ক্ষেত্রে শুধুমাত্র ৫০ গ্রাম বা ৩০ টি কাজু বাদাম খাওয়া উচিত যা তাদের জন্য যথেষ্ট। একজন প্রাপ্তবয়স্ক প্রতিবারে ৩০ থেকে ৩৫ টি বাদাম খেতে পারেন এবং প্রতিবারে ৫০ গ্রাম থেকে ৭০ গ্রাম করে খেতে পারেন।
কাজু বাদামের দাম
কাজু বাদাম আসে ভিয়েতনাম ও ভারত থেকে। এই দুই ধরনের বাদামের দাম চিনাবাদামের কয়েকগুণ বেশি। পাইকারিতে প্রতি কেজি কাজু বাদাম ৯৫০ থেকে এক হাজার ৫০ টাকায় বিক্রি হয়, যা খুচরা বাজার থেকে কিনলে পড়ে ১৩০০-১৪০০ টাকার মতো।
কাজু বাদামের পার্শ-প্রতিক্রিয়া বা ক্ষতিকর দিক
কোনো কিছুই অতিরিক্ত ভালো হয় না। কাজু বাদামের অনেক পুষ্টিগুণ থাকলেও এর অতিরিক্ত গ্রহন কিছু পার্শ-প্রতিক্রিয়া বয়ে নিয়ে আসতে পারে। তাই নিচ থেকে দেখে নিন কাজু বাদামের পার্শ-প্রতিক্রিয়া বা ক্ষতিকর দিক –
- কাজু বাদাম একটি ফাইবার জাতীয় খাবার- তাই এটি বেশি খেলে পেটে সমস্যা দেখা দিতে পারে।
- আমরা মাছ, মাংস ও ডালের সাথে প্রোটিন গ্রহণ করে থাকি। তাই বেশি প্রোটিন সমৃদ্ধ কাজু বাদাম কিডনির জন্য ঝুঁকিপূর্ণ।
- এই বাদামে রয়েছে ম্যাগনেসিয়াম যা অনেক ওষুধের কার্যক্রমে বাধা প্রদান করে।
- অনেকের আবার বাদামে এলার্জি থাকে।
সর্বশেষ কথা
আশা করি আজকের পোস্ট এর সাহায্যে সবাই কাজু বাদামের উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে জানতে পেরেছেন। আপনাদের যদি কাজু বাদামের উপকারিতা ও অপকারিতা পোস্ট ভালো লেগে থাকে। তাহলে অবশ্যই সবার সাথে শেয়ার করবেন। যাতে সবাই কাজু বাদাম খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে জানতে পারে। সাথে থাকার জন্য সবাইকে ধন্যবাদ।
আরও দেখুনঃ