আগামী ২৫ ফেব্রুয়ারী পুরো বাংলাদেশ পালিত হবে শবে বরাত। তাই যারা লাইলাতুল বরাত কে সামনে রেখে শবে বরাতের নামাজের নিয়ম ও দোয়া সম্পর্কে জানতে চান। তাদের জন্য আজকের এই পোস্ট টা তুলে ধরা হয়েছে শবে বরাতের নামাজ কয় রাকাত। বাংলাদেশের ধর্ম মন্ত্রণালয় চাঁদ দেখার উপর নির্ভর করে ২৫ ফেব্রুয়ারী ঘোষণা করেছে, ২০২৪ সালের শবে বরাত হবে ২৫ ফেব্রুয়ারী রাতে।
অন্যদিকে সরকারি ছুটি হবে ২৬ ফেব্রুয়ারী। বাংলাদেশের সকল ধর্মপ্রাণ মুসলিম রা শবেবরাত উপলক্ষে নামাজ আদায় করে থাকে। আবার অনেকে নামাজের সাথে দোয়া ও জিকির করে থাকে। কিন্তু অনেকেই আছেন যারা শবে বরাতের নামাজের নিয়ম ও দোয়া সম্পর্কে জানেন না। তাদের জন্য আজকের এই পোস্ট এ শবে বরাতের নামাজ কয় রাকাত পড়তে হবে ও কোন সূরা দিয়ে পড়তে হবে সে সম্পর্কিত বিস্তারিত তথ্য তুলে ধরা হয়েছে।
Contents
- 1 Shobe borat namajer niyom
- 2 শবে বরাতের নামাজ কত রাকাত
- 3 শবে বরাতের নামাজ ২০২৪
- 4 শবে বরাতের নামাজ
- 5 শবে বরাতের নামাজের সূরা
- 6 শবে বরাতের নামাজের নিয়ম
- 7 শবে বরাত নামাজের নিয়ম
- 8 শবে বরাতের নামাজের নিয়ত
- 9 শবে বরাতের রোজা কয়টি
- 10 শবে বরাতের পর দিনের রোজা
- 11 শবে বরাতের নামাজের দোয়া
- 12 বেতের নামাজের পর শবে বরাতের নামাজ পড়া যাবে কি
Shobe borat namajer niyom
শবে বরাতের নামাজ পড়তে হলে আপনাকে অবশ্যই সঠিক নিয়ম জানতে হবে। শবে বরাতের নামাজ কিভাবে পড়বেন ও কোন সূরা দিয়ে পড়বেন তার বিস্তারিত তথ্য আজকের পোষ্টে তুলে ধরা হয়েছে। শবে বরাত উপলক্ষে অনেকেই সূরা ফাতিহার সাথে আয়াতুল কুরসী সূরা ইখলাছ মিলিয়ে পড়ে থাকে। আজকের পোস্টে আমরা সম্পূর্ণ তথ্য তুলে ধরেছি।
শবে বরাতের নামাজ কত রাকাত
অনেকেই আছেন যারা শবে বরাতের নামাজ কত রাকাত পড়তে হবে জানতে চান। তাদের জন্য ইসলামিক হাদিসের আলোকে শবে বরাতের নামাজ কত রাকাত হবে সে সম্পর্কে বিস্তারিত তুলে ধরেছি। সাধারণত শবে বরাতের নামাজ হচ্ছে নফল নামাজ। তাই এই নামাজ আর অন্য নামাজের মাঝে কোন পার্থক্য নেই। আপনি দুই রাকাত নফল নামাজের নিয়ত করে আপনার সামর্থ্য অনুযায়ী আপনি যতটুকু পারেন পড়তে পারেন সে ক্ষেত্রে ৮/১০/১২/১৪/১৬ বা আরো বেশি হতে পারে।
শবে বরাতের নামাজ ২০২৪
প্রতিবছর শাবান মাসের ১৪ তারিখ রাতে শবে বরাতের নামাজ পালিত হয়। সকল মুসলমানের কাছে শবে বরাতের নামাজ একটি বিশেষ ইবাদত। সবাই শবে বরাতের নামাজ কে নফল নামাজ হিসেবে পালন করে থাকে। এবছর শবে বরাতের নামাজ অনুষ্ঠিত হবে ২৫ ফেব্রুয়ারী রোজ রবিবার এশার ফরজ নামাজের পরে। তাই আপনি যদি শবে বরাতের নামাজ পড়তে চান। তাহলে ইসলামিক হাদিস ও নামাজের সূরা সম্পর্কে জেনে নিন।
শবে বরাতের নামাজ
শবে বরাতের নামাজ পড়তে হলে আপনাকে জানতে হবে কোন সুরার মাধ্যমে শবে বরাতের নামাজ পড়তে হয়। অন্যদিকে শবে বরাতের নামাজ পড়ার নিয়ত বাংলা বা আরবি আপনাকে অবশ্যই জানতে হবে। তাই আপনারা যাতে লাইলাতুল বরাতের নামাজ সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে পারেন। তার জন্য ইসলামিক হাদিস অনুসারে শবে বরাতের নামাজ সম্পর্কিত সকল তথ্য তুলে ধরেছি আমরা। তাই আজ শবে বরাতের নামাজের আগে ভালো করে দেখে নিন শবে বরাতের নামাজ কিভাবে পড়তে হয়।
শবে বরাতের নামাজের সূরা
শবে বরাতের নামাজ কোন সূরা দিয়ে পড়বেন তা অবশ্যই আপনাকে জানতে হবে। আজ পবিত্র শবে বরাত তাই সকল মুসলমান শবে বরাতের নামাজ কোন সূরা দিয়ে পড়বে তা জানার জন্য গুগলে অনুসন্ধান করে। তাদের জন্য এখানে আমরা তুলে ধরেছি কোন সূরা দিয়ে শবে বরাতের নামাজ পড়া যায়। আপনি শবে বরাতের নফল নামাজ পড়ার জন্য সূরা ফাতিহার সাথে যে কোন সূরা মিলিয়ে শবে বরাতের নামাজ পড়তে পারেন। তবে সমাজে কিছু প্রচলিত নির্দিষ্ট সুযোগ রয়েছে যেমন সূরা ইখলাস সূরা কদর। তবে লাইলাতুল বরাত একটি নফল নামাজ। তাই সূরা ফাতিহার সাথে কোরআন শরীফ থেকে যে কোন সূরার ৩ আয়াত মিলিয়ে আপনি নামাজ পড়তে পারেন।
শবে বরাত কত তারিখে | শবে বরাত কবে ২০২৪ – প্রকাশ করলো ধর্ম মন্ত্রণালয়
শবে বরাতের নামাজের নিয়ম
অনেককেই জিজ্ঞেস করতে দেখি “শবে বরাতের নামাজের নিয়ম কী?” আসলে এই রাত্রির নামাজ আর দশটা রাত্রিতে পড়া নফল নামাজের মতই। ভিন্ন কোন পদ্ধতি রাসূল (সাঃ) অবলম্বন করেন নি। তাই নিজেদের মনগড়া সিসটেমে প্রতি রাকাতে ৭ বার বা ১১ বার সূরা ইখলাসের মাধ্যমে ‘শবে বরাতের নামাজ’ না পড়ে স্বাভাবিক নিয়মে ২ রাকাত করে যতটুকু পারা যায় পড়া উচিত।
শবে বরাত নামাজের নিয়ম
বিভিন্ন নামাজ শিক্ষা বই ও মোকসেদুল মোমিনের মত বানোয়াট মিথ্যা ও জাল বইগুলোতে শবে বরাতের নামাজের নিয়ম, শবে মেরাজের নামাজের নিয়ম, শবে ক্বদরের নামাজের নিয়ম ইত্যাদি দেয়া হয়ে থাকে। এগুলো সবই তাদের মনগড়া বক্তব্য। কোনো নফল নামাজের ক্ষেত্রেই এরকম বিশেষ কোনো নিয়ম নাই। তাহাজ্জুদ বা কিয়ামুল লাইলের ক্ষেত্রে আমাদের উচিত দীর্ঘ সময় কুরআন তিলাওয়াত করা। লম্বা সূরা জানা না থাকলে যেই ১০ টা সূরা সবাই জানি সেগুলোই ২ রাকাতে ৫ টা / ৫ টা করে পড়তে পারি। তাতেও কিরআত দীর্ঘ করা হবে। আমাদের উচিত অর্থ বুঝে নামাজ পড়া। দীর্ঘ রুকু করা। সিজদাকে দীর্ঘ করা। দুয়া-ইস্তিগফার করা। ঘুমাবার দরকার হলে ঘুমানো। এমন যেন না হয় সারা রাতের নফল ইবাদতের ক্লান্তিতে ফজরের ফরজ নামাজ ছুটে যায়।
সারা বছরই রাতের শেষ ভাবে উঠে তাহাজ্জুদ পড়া আল্লাহর রাসূলের (সা) সারা জীবনের সুন্নত। অসংখ্য সহীহ হাদীস দ্বারা তাহাজ্জুদের নামাজের ফজিলত প্রমাণিত। ফরজ নামাজের পর শ্রেষ্ঠতম নামাজ হচ্ছে তাহাজ্জুদের নামাজ। এরপর দ্বিতীয় শ্রেষ্ঠ নামাজ হচ্ছে সালাতুল দুহা বা চাশতের নামাজ। এগুলো অসংখ্য সহীহ হাদীস দ্বারা প্রমাণিত। আমরা যারা আমাদের ঈমানের যজবার কারণে দুর্বল ও যঈফ হাদীসের উপর আমল করতে এত আগ্রহী। আসুন তারা অন্যান্য সহীহ হাদীসগুলোর উপরও নিজেদের আমল জিন্দা রাখি। সারা বছরই সাধ্য মত ২ রাকাত করে হলেও তাহাজ্জুদ আর চাশতের নামাজ পড়ি।
শবে বরাতের নামাজের নিয়ত
শবে বরাতের রোজা কয়টি
আমাদের মা-বোনেরা অনেকেই শবে বরাতের রোজা রেখে থাকে। শবে বরাতের রোজা কয়টি রাখা উত্তম সে সম্পর্কে বিস্তারিত তুলে ধরা হলো। তাদেরকে জানাতে চাই শবে বরাতের রোজা ১ টি। যা আপনাকে শবে বরাতের পরের দিন রাখতে হবে।
শবে বরাতের পর দিনের রোজা
প্রতিটি আরবি মাসের ১৩, ১৪ ও ১৫ তারিখ রোজা রাখা নবীজির (সা) সুন্নাহ। আর শাবান মাসে রাসূল (সাঃ) অনেক বেশি রোজা রাখতেন। সে হিসেবে ১৫ তারিখ রোজা রাখাও সুন্নাহ। কিন্তু এর বাইরে শবে বরাতের পরের দিন রোজা রাখার ফজিলত সম্পর্কে মুহাদ্দিসগণের মধ্যে মতপার্থক্য রয়েছে।
আলী বিন আবূ তালিব (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, যখন মধ্য শাবানের রাত আসে তখন তোমরা এ রাতে দাঁড়িয়ে সালাত পড় এবং এর দিনে সওম রাখ। কেননা এ দিন সূর্য অস্তমিত হওয়ার পর আল্লাহ পৃথিবীর নিকটতম আকাশে নেমে আসেন এবং বলেন, কে আছো আমার নিকট ক্ষমাপ্রার্থী, আমি তাকে ক্ষমা করবো। কে আছো রিযিকপ্রার্থী আমি তাকে রিযিক দান করবো। কে আছো রোগমুক্তি প্রার্থনাকারী, আমি তাকে নিরাময় দান করবো। কে আছ এই প্রার্থনাকারী। ফজরের সময় হওয়ার পূর্ব পর্যন্ত (তিনি এভাবে আহবান করেন)।
(ইবনে মাজাহ ১৩৮৮, হাদীসের মানঃ আল্লামা নাসিরুদ্দীন আলবানীর তাহক্বীক অনুযায়ী এটি যঈফ জিদ্দান বা মওযূ অর্থাৎ জাল হাদীস)
এজন্য ফিকহের একাধিক কিতাবেই এদিনে রোযাকে মুস্তাহাব বা মাসনূন হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে। আবার অনেকে বিশেষভাবে এ দিনের রোযাকে মুস্তাহাব বা মাসনুন বলতে অস্বীকার করেছেন। এ প্রসঙ্গে হযরত মাওলানা মুহাম্মাদ ত্বাকী উসমানী তার ইসলাহী খুতুবাতে বলেন,
‘আরো একটি বিষয় হচ্ছে শবে বরাতের পরবর্তী দিনে অর্থাৎ শাবানের পনের তারিখে রোযা রাখা। গভীরভাবে বিষয়টি উপলব্ধি করা প্রয়োজন। হাদীসে রাসুলের বিশাল ভান্ডার হতে একটি মাত্র হাদীস এর সমর্থনে পাওয়া যায়। তাতে বলা হয়েছে, শবে বরাতের পরবর্তী দিনটিতে রোযা রাখ। সনদ বর্ণনার সূত্রের দিক থেকে হাদীসটি দুর্বল। তাই এ দিনের রোযাকে এই একটি মাত্র দুর্বল হাদীসের দিকে তাকিয়ে সুন্নাত বা মুস্তাহাব বলে দেওয়া অনেক আলেমের দৃষ্টিতে অনুচিত।
তাই আমরা সেফ সাইডে থাকার জন্য শাবানের ১৩, ১৪ ও ১৫ তারিখ তিনটি রোজাই রাখব ইনশাআল্লাহ। এতে নবীজির (সা) সারা জীবনের সুন্নত আইয়ামে বীজের রোজা রাখার উপর আমাদের আমল করা হবে। আবার উপরের দুর্বল হাদীসটিতে ১৫ তারিখ রোজা রাখার কথা এসেছে, সেটার উপরও আমল করা হবে। কারো যদি একান্তই সম্ভব না হয় সেক্ষেত্রে একটি মাত্র রোজা রাখতে চান সেক্ষেত্রে ১৫ তারিখ অর্থাৎ শবে বরাতের পরদিনের রোজা রাখলেও তা দোষণীয় হবে না বলে মুহাদ্দীসগণের একটা অংশ মনে করেন।
শবে বরাতের নামাজের দোয়া
যারা শবে বরাতের নামাজ দুই রাকাত করে নফল আদায় করবেন। চার রাকাত পর পর আপনি বিভিন্ন জিকির-আজগার করে আল্লাহর কাছে দোয়া প্রার্থনা করতে পারেন। ধোয়ার মাঝে আল্লাহর কাছে ক্ষমা প্রার্থনা সহ আপনার মনের নেক বাসনাগুলো আল্লাহর কাছে বলতে পারেন।
বেতের নামাজের পর শবে বরাতের নামাজ পড়া যাবে কি
বেতর নামাজ পড়ার আগে আপনি শবে বরাতের বিভিন্ন আমল করে নিবেন। সবার শেষে বিতর নামাজ পড়বেন।
শেষ কিছু কথা
তবে অবশ্যই মনে রাখবেন শবে বরাতের নফল নামাজ পড়তে গিয়ে ফরজ যেন ছুটে না যায়। অর্থাৎ সারারাত জেগে শবে বরাতের নামাজ পড়লেন কিন্তু সকালে ফজরের নামাজ পড়তে পারলেন না এমন করা যাবে না।
Read More