সাধারণত ডাবের পানি গরমের দিনে বেশি খাওয়া হয় ডাব সাধারণত পানি জাতীয়। রোদের মাঝে যখন অনেক পিপাসর অনুভূতি হয় তখন ভাবের পানি পান করলে শরীর অনেকটাই নিস্তেজ হয়ে আসে এবং শরীরে আরামদায়ক লাগে। তাই এই গরমের মাঝে যারা ডাব খেতে পছন্দ করেন। বা ডাব খাওয়ার উপকারিতা সম্পর্কে জানতে চান এবং অপকারিতা সম্পর্কে জানতে চান তারা এই পোস্ট থেকে জেনে নিন।
আমরা কয়েকটি বিষয়ে বিভক্ত করে এর উপকারিতা ও অপকারিতা তুলে ধরেছি। আপনাদের বোঝানোর সুবিধার্থে সারসংক্ষেপে তুলে ধরা হয়েছে। আশা করি আপনারা আজকের এই পোস্ট থেকে খুব সহজে জানতে পারবেন ডাবের উপকারিতা ও অপকারিতা। তাহলে চলুন শুরু করা যাক।
Contents
ডাবের পানির উপকারিতা কি
জেনে রাখা প্রয়োজন আপনি যা খাচ্ছেন তা উপকারে আসে কিনা। অনেকে এই সম্পর্কে জানতে চায় তাহলে চলুন শুরু করা যাক।
- ডাবে রয়েছে বিশেষ গুন, ডাব শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে। ডাবের পানিতে আছে অ্যান্টিফাঙ্গাল ও অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল। যার কারণে ত্বকের ইনফেকশন দূর করে এবং শরীরে নানান সমস্যা সমাধানের জন্য খুবই উপকারী। এছাড়া ডাবের পানি ত্বকের অতিরিক্ত তেলকে দূর করে ময়েশ্চারাইজার হিসেবেও কাজ করে।
- যারা গরমের মাঝে কঠোর পরিশ্রম করে কাজ করে, অতিরিক্ত গরমের ফলে শরীর থেকে নোনা পানি বের হয়। এর ফলে শরীরে পানি স্বল্পতা দেখা যায়। এই পরিস্থিতিতে ডাবের পানি পান করার মাধ্যমে শরীরের পানি স্বল্পতা দূর কেরে এবং নানান ধরনের সমস্যা থেকে দূরে থাকা যায়। ডাবে আছে কার্বোহাইড্রেড যা শক্তি বাড়ায় এবং শরীরে পানি শূন্যতা পূরণ করে। তাই গরমের পিপাসা মিটানোর জন্য ডাবের পানি খুবই কার্যকরী
- আমাদের শরীরের বিষাক্ত পদার্থ বের করার জন্য ভাবের পানি কার্যকরী। এর ফলে শরীর সুস্থ ও সতেজ থাকে তাই ডাবের পানি খাওয়া ভালো । অপ্রয়োজনীয় পানি পান না করাই ভালো। কাজের ফাঁকে বা অন্য কোন ব্যাস্ততার মাঝে ভাবের পানি খাওয়া উপকারি।
ডাবের পানির উপকারিতা
আমরা উপরে জেনেছি ডাবের পানি খেলে বিভিন্ন রোগের প্রতিরোধ করা যায়। গবেষণায় দেখা গেছে শুধু গরমকাল নয়, সারা বছর যদি নিয়ম করে ডাবের পানি খাওয়া যায়। ডাবের পানি উপস্থিত অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, অ্যামাইনো অ্যাসিড, ভিটামিন বি কমপ্লেক্স, ভিটামিন সি, আয়রন, ক্যালসিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম, মেঙ্গানিজ এবং জিঙ্ক নানাভাবে শরীরে গঠনে বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে। এসব উপাদানই আমাদের বেঁচে থাকার জন্য প্রয়োজন পরে।
- নিয়মিত ডাবের পানি খেলে অ্যাসিডিটির হাত থেকে রক্ষা পাওয়া যায়। এছাড়াও ডাবের পানিতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ফাইবার যা আমাদের পাচনতন্ত্রকে সুস্থ রাখে। হজমশক্তি বাড়িয়ে তোলে। তাই যাদের হজম শক্তি সমস্যায় ভুগছেন তারা ভাবের পানি পান করতে পারেন।
- ত্বকের যত্নের জন্য ডাবের পানি খুবই কার্যকারী। শরীর ভালো রাখার জন্য নিয়মিত ডাবের পানি পান করলে আর্দ্র ও ব্রণের সমস্যা কমে যায়। তাই বলা যায় ডাবের পানি অনেক কার্যকরী।
- সময়ের সাথে সাথে হাড়ের ক্ষয় হতে থাকে। হাড়ের ক্ষয় রোধ করার জন্য ডাবের পানির উপকারিতা আছে। আর মজবুত করার জন্য প্রয়োজন ক্যালসিয়াম ডাবের পানির মধ্যে বিদ্যমান। যারা ডাবের পানি পান করবে তাদের হার মজবুত হবে। এতে থাকা ম্যাগনেসিয়াম, যা হাড়কে ভালো রাখতে সাহায্য করে। তাই হাড়ের সমস্যা দূর করার জন্য ডাবের পানি খেতে পারেন
ডাবের পানির পুষ্টিগুণ
ডাবের পানিতে প্রচুর পরিমাণ পটাশিয়াম ও অন্যান্য খনিজ পদার্থ আছে। এক কাপ ডাবের পানিতে যা খনিজ পদার্থ আছে, তা অনেক স্পোর্টস ড্রিংকের চাইতেও বেশি। এছাড়াও পরীক্ষিত ডাবের পানিতে রয়েছে প্রচুর সোডিয়াম ক্লোরাইড তা শরীরে জন্য প্রয়োজনীয়। এতে পটাশিয়াম আছে প্রচুর পরিমাণে। এর ফলে নানান ধরনের সমস্যা ঘাটতি পূরণ করে। খনিজ উপাদান থাকায় বাড়ন্ত শিশু থেকে শুরু করে বৃদ্ধ পর্যন্ত সবার জন্য ডাবের পানি যথেষ্ট উপকারী।
এছাড়া ডাবের এই গুনাগুন আমাদের শরীরের জন্য অনেক উপকারি। ডাবের পানি খাওয়ার ফলে আরো অনেক সমস্যা দূর করে যেমন।
- ডাবের পানি ওজন কমাতে সাহায্য করে।
- ত্বক সুন্দর রাখতে সাহায্য করে।
- রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে।
- হজম শক্তি বৃদ্ধি করে ও বদহজম দূর করে।
- হাড় ও পেশীর গঠনে মজমুদ করে।
- র*ক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ করে।
- গর্ভবতী ও স্তন্যদায়ী মায়ের স্বাস্থ্য রক্ষায় অনেক কার্যকারী।
- কিডনির সুরক্ষা করে।
তাই বলা যায় ডাবের পানির উপকারিতা অনেক। তাই আমরা চেষ্টা করব অপ্রয়োজনীয় পানীয় খাওয়ার পরিবর্তে নিয়মিত ডাবের পানি খাওয়া। এতে করে শরীর সুস্থ ও সবল থাকবে। নিচে ডাবের পানির উপকারিতা সম্পর্কে কিছুটা ধারণা দেয়া হয়েছে নিচ থেকে পড়ে নিন।
ডাবের পানির উপকারিতা ও অপকারিতা
আমরা উপরে আলোচনা করেছি ডাবের পানির উপকারিতা সম্পর্কে। এখন চলুন জেনে নেওয়া যাক ডাবের পানির অপকারিতা দিকগুলো।
- ডাবের পানি শরীরে ক্যালরির মাত্রা বাড়িয়ে দেয়। কারণ ডাবের পানিতে রয়েছে প্রচুর ক্যালরি। যারা জানেন না তারা সতর্ক হোন কেননা বেশি ক্যালরি ফলে শরীরের ওজন বৃদ্ধি করে। যারা শরীরের ওজন বৃদ্ধি করতে চান না তারা ডাবের পানি থেকে বিরত থাকুন। তবে ডাবের পানি খাওয়া যাবে না তা কিন্তু নয় স্বাভাবিক মত খান তাহলে অবশ্যই শরীরের মেদ নিয়ন্ত্রণ রাখতে পারবেন। ডাবের পানিতে চিনির পরিমান কম থাকলেও র*ক্তে শর্করার মাত্রা বাড়িয়ে দেয়। কেননা ডাবে থাকা কার্বহাইড্রেট ও ক্যালরি অধিক মাত্রায় থাকে যার ফলে র*ক্তে শর্করার মাত্রা বেড়ে যায়।
- যদিও ডাবের পানিতে চিনির পরিমাণ কম তবুও ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য ক্ষতিকর। যদি আপনার ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ রাখতে চান তাহলে অবশ্যই ডাবের পানি থেকে বিরত থাকুন। কারণ অতিরিক্ত ডাব খেলে ডায়বেটিসের বেড়ে যাওয়া সম্ভাবনা থাকে।
- ডাব নিয়মিত খেলে কিডনি রোগ হয় না৷ তবে যাদের কিডনি রোগ হয়েছে তাদের ডাবের পানি খাওয়া নিষেধ। কারণ কিডনি অকার্যকর হলে শরীরের অতিরিক্ত পটাশিয়াম দেহ থেকে বের হয় না। ফলে ডাবের পানির পটাশিয়াম ও দেহের পটাশিয়াম একত্রে কিডনি ও হৃদপিণ্ড দুটোই অকার্যকর করে দেয়। তাই যাদের দেহে প্রচুর পটাশিয়াম আছে এবং বের হয় না তাদের ডাবের পানি পান করা ঠিক না৷
- যাদের র*ক্তচাপ বেশি তারা ডাবের পানি থেকে বিরত থাকুন। কারণ এতে থাকা সোডিয়াম র*ক্তাচাপ বাড়িয়ে দেয়। তাই অতিরিক্ত ডাবের পানি খাওয়া থেকে বিরত থাকুন প্রতিমাসে তিন থেকে পাঁচ টির বেশি খাওয়া নিষেধ।
ডাবের পানির ক্ষতিকর দিক
ওপরে ডাবের পানির ক্ষতিকর দিকগুলো তুলে ধরা হয়েছে। আশা করি আজকের এই আর্টিকেলটি আপনারা খুব সহজে বুঝতে পেরেছেন এবং আজকের এই পোস্ট আপনাদের উপকারে এসেছে। আশা করা যায় ডাবের পানির অপকারিতা বা ক্ষতিকর দিকগুলো জানতে পেরেছেন।
শেষ কথা
আমরা চেষ্টা করেছি আজকের এই পোস্টে ডাবের পানির উপকারিতা ও অপকারিতা তুলে ধরার। আশা করি আজকের এই পোস্টে থেকে আপনি খুব সহজেই উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে জানতে পেরেছেন। এছাড়া আপনারা চাইলে আমাদের ওয়েবসাইট ভিজিট করে স্বাস্থ্য বিষয়ে আরো অন্যান্য আর্টিকেল পড়তে পারেন। এতে করে আপনাদের উপকারে আসবে।
আরও দেখুনঃ