হলুদ এক ধরনের মসলা। নানা ধরনের মসলার সাথে এটি নানা ধরনের খাবারের স্বাদ বাজিয়ে তোলার জন্য হলুদের ব্যবহার অনেক। আমরা প্রতিনিয়তই বাড়ির বিভিন্ন রান্নায় ব্যবহার করে থাকি এবং বিভিন্ন অনুষ্ঠানে ব্যবহার করে থাকি। অনেকেই হলুদের উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে জানতে চায়। আমরা চেষ্টা করব আজকে আপনাদের মাঝে এ বিষয়ে তুলে ধরর। আশা করি আজকের এই পোস্ট আপনারা মনোযোগ সহকারে সম্পূর্ণ পড়বেন। তাহলে চলুন জেনে নেয়া যাক হলুদের উপকারিতা ও অপকারিতা।
Contents
কাঁচা হলুদ খাওয়ার নিয়ম
বিভিন্ন রোগ প্রতিরোধ করার জন্য হলুদ খাওয়া যায়। হলুদ খাওয়ার ফলে শরীর স্বাস্থ্য ভালো রাখা যায়। আপনারা অনেকেই জানতে চান কিভাবে হলুদ খেতে হয়। আমরা খুব সহজেই বোঝানোর চেষ্টা করব। তাহলে চলুন জেনে নেওয়া যাক।
চিকিৎসকদের মতে, হলুদের উপকারিতা পাওয়ার জন্য দুধের সাথে স্বাভাবিক মত হলুদ মিশিয়ে খেতে হবে। হলুদে থাকা কারকিউমিনকে পুরোপুরি কাজে লাগাতে পারে দুধ। পানি বা গুড়ের সঙ্গে হলুদ মিশিয়ে খেলে কারকিউমিনের অনেকটা শোষিত হয় না। এছাড়া গোলমরিচের সঙ্গে বেটে হলুদ খাওয়া যায়। কারণ, গোলমরিচে আছে পিপারিন। তা কারমিউমিনের কার্যক্ষমতা প্রায় দুই হাজার শতাংশ বাড়িয়ে দেয়৷
এছাড়া কাচা হলুদের সাথে মোটমটির ডোগা মিশে রস করে খেলে পাতলা পায়খানা জনিত রোগ থেকেও মুক্তি পাওয়া যায়। এছাড়াও আরও বিশেষ কারণে হলুদ খাওয়ার উপকারিতা রয়েছে যা নিচে উল্লেখ করা হয়েছে।
কাঁচা হলুদের উপকারিতা ও অপকারিতা
কাঁচা হলুদ র*ক্ত পরিষ্কার রাখে এবং রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়। তাই বলা যায় কাচা হলুদ খাওয়া অনেক উপকারী। কাঁচা হলুদ বৈজ্ঞানিকভাবে প্রমাণিত এর অনেক বিশেষ গুণ রয়েছে যা শরীরের জন্য খুবই উপকারী। কাঁচা হলুতে থাকা এন্টি ইনফ্লেমেটরি ও এন্টি অক্সিডেন্ট । এটি বিষণ্ণতা ও অর্থাটিসের লক্ষণ গুলিকে উন্নত করতেও সাহায্য করে। এছাড়াও কাঁচা হলুদ ক্ষত সারানোর ক্ষেত্রে কাজে লাগে এবং ক্ষত, সংক্রমণ, ঠাণ্ডা ও লিভারের চিকিৎসায় অনেক কার্যকারী।
- হজম শক্তি বাড়ানোর জন্য কাঁচা হলুদের উপকারিতা
বিশেষজ্ঞরা বলেছেন যে কাচা হলুদ এর ব্যাবহার পেটের আলসার ও জ্বালা নিরাময়েও সাহায্য করতে পারে । এছাড়াও কাঁচা হলুদ হজম শক্তি বাড়াতে সাহায্য করে। কাচা হলুদ বদ হজম ও বুক জ্বালা প্রতিরোধ করতে পারে । কাঁচা হলুদ বাওয়েল সিনড্রোমের মতো উপসর্গ থেকে মুক্তি দিতে পারে।
- খাদ্য পরিপাকে সাহায্য করে
কাঁচা হলুদের মধ্যে গ্যাস্ট্রো-প্রটেক্টিভ কিছু গুণ থাকে যা খাবার পরিপাকে সাহায্য করে। ফলে হজমের গোলমাল, গ্যাসের সমস্যার ক্ষেত্রে কাঁচা হলুদ খুবই উপকার দেয়।
কাচা হলুদ এর উপকারিতা ও অপকারিতা
আমরা প্রত্যেকেই হলুদের ব্যবহার জানি। তবে অনেকে জানিনা এর গুনাগুন তবে জেনে নেওয়া যাক হলুদের উপকারিতা সম্পর্কে। হলুদ রান্নার কাজে ব্যবহার করা হয় এছাড়াও হলুদ ত্বকে যত্নে ও ঔষধি হিসেবে কাজ করে।
পরিপাক তন্ত্রের কার্যক্ষমতা বাড়ানোর মধ্য দিয়ে আপনার হজম ক্রিয়া সচল রাখতে সহায়তা করে হলুদ। এ ছাড়া ওজন কমাতেও হলুদ বেশ উপকারী। স্থূলতা বাড়াতে থাকা টিস্যুর গ্রোথ কমিয়ে আনতে সহায়তা করে এ মসলাটি। ক্ষতস্থান সারানোর জন্য হলুদ অনেক উপকারী কোথাও কেটে গেলে বা ক্ষত হলে নিয়ম মত হলুদ খেলে দ্রুত র*ক্ত জমাট বাঁধতে সহায়তা করে। জানলে অবাক হবেন হলুদ শরীরের ব্যথা সারাতে অনেক কার্যকরী।
নিয়মিত হলুদ খেলে শরীরের ব্যথা অনেকটাই কমে আসে। এছাড়া জাফরানমিশ্রিত দুধে হলুদের এক চিমটি মিশ্রণ আপনার ত্বকের জন্য বেশ উপকারী। মানসিক অবসাদ দূর করতে, সর্দি কাশি কিংবা জ্বরের ক্ষেত্রে হলুদে রয়েছে প্রাকৃতিক নানা উপাদান। এ ছাড়া মেয়েদের অনিয়মিত ঋতুস্রাবের ক্ষেত্রেও হলুদ বেশ কার্যকর। কাঁচা হলুদ কিংবা হালকা গরম দুধের সঙ্গে অল্প হলুদ গুঁড়া মিশিয়ে নিলেই খুব সহজেই ঋতুস্রাবের ব্যথা থেকে মুক্তি পাওয়া সম্ভব।
হলুদের উপকারিতা ও খাওয়ার নিয়ম
হলুদের আরো কিছু উপকারিতা সম্পর্কে জেনে নেওয়া যাক। হলুদ নানা বিষয়ে কার্যকারী যেমন-
- যারা ওজন কমাতে চান তারা নিয়মিত হলুদ খেলে ওজন কমাতে পারবেন
- তোকে সৌন্দর্য বৃদ্ধি করার জন্য হলুদের উপকারিতা অনেক
- হজমের সমস্যা দূর করে
- আর্থ্রাইটিসের ব্যথা হ্রাস করে
- ক্যানসার ঠেকাতে সাহায্য করে
- হৃদ্যন্ত্রকে রক্ষা করে
- মস্তিষ্কের ক্ষয়জনিত সমস্যা রোধ করে
- যকৃৎ সুরক্ষিত রাখে
- নিয়মিত পিরিয়ড নিশ্চিত করে
- শ্বাসক্রিয়াকে শক্তিশালী করে
- আমাদের স্থূলতার জন্য দায়ী টিস্যুগুলোর বৃদ্ধি রোধ করে। মেটাবলিজম বাড়ায়। ফলে চিনিজাত খাদ্য শরীরে চর্বি আকারে জমাট বাঁধতে পারে না। হলুদ রোগ প্রতিরোধক্ষমতা বাড়ায়। জীবাণু ও ব্যাকটেরিয়াজনিত সংক্রমণ সারিয়ে তোলে।
- মুখের তেলতেলে বাবু দূর করে এবং ত্বকের বলিরেখা বয়সের ছাপ দূর করে ত্বকের ব্রণ ও খুশকি দূর করে।
- যাদের হজম শক্তি দুর্বল তারা নিরাপদেও হলুদ খেলে হজম শক্তি বৃদ্ধি করে। হলুদ পরিপাকতন্ত্রের কর্মক্ষমতা বাড়ায়। পাকস্থলীতে গ্যাস্ট্রিকজাতীয় উপাদানের আধিক্য শারীরিক অসুস্থতা আনে। তৈরি করে মানসিক অস্থিরতা। হলুদ এ ক্ষেত্রে মহৌষধ হিসেবে কাজ করে
হলুদের উপকারিতা ও অপকারিতা
হলুদের উপকারিতা সম্পর্কে উপরে আলোচনা করা হয়েছে আশা করি খুব সহজে জানতে পেরেছেন। এখন জানানো হবে হলুদের অপকারিতা সম্পর্কে। হলুদের উপকারিতা ও অপকারিতা দুটো দিকই রয়েছে। হলুদ ব্যবহারের উপর নির্ভর করে আপনি কতটুকু প্রতিদিন হলুদ ব্যবহার করছেন। হলুদ যেমন ঔষধি কাজে ব্যবহার করা যায় এটি অতিরিক্ত ব্যবহার করলে ক্ষতিও হয়। অতিরিক্ত হলুদ খাওয়ার ফলে পেটের সমস্যা দেখা দিতে পারে। হলুদ খাওয়ার ফলে হজম শক্তি বৃদ্ধি হয় তবে অতিরিক্ত খেলে হলুদে থাকা উপাদানগুলো আপনার বুক জ্বালাপোড়া করতে পারে এবং পেট খারাপ হতে পারে। এছাড়াও কিছু সমস্যা দেখা দিতে পারে যেমন- মাথা ঘোরা, বমি বমি ভাব, ব্যথা ও ডায়রিয়ার মতো হালকা পার্শ্ব দেখা দিতে পারে।
অতিরিক্ত হলুদ খেলে র*ক্ত জমাট বাঁধতে পারে। কাচা হলুদের কারনে আপনার শরীরের র*ক্ত অনেক বেশী পাতলা হয়ে যায় । র*ক্ত পাতলা করার প্রভাবের কারনে গর্ভবতী মহিলাদের হলুদের পরিপূরক গ্রহণ করা এড়ানো উচিত । এছাড়াও এটি র*ক্তপাতজনিত অসুস্থতায় লোকেদের র*ক্তপাত এবং র*ক্তপাতের ঝুঁকি বাড়িয়ে তুলতে পারে।
শেষ কথা
আমরা চেষ্টা করেছি খুব সহজেই হলুদের উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে জানানোর। আশা করা যায় আপনারা খুব সহজে এই সম্পর্কে জানতে পেরেছেন। আপনারা যদি আরও স্বাস্থ্য সম্পর্কে জানতে চান। তাহলে আমাদের ওয়েবসাইট ভিজিট করে দেখতে পারেন। স্বাস্থ্য বিষয়ে আরো নানান ধরনের পোস্ট রয়েছে। আশা করি সেগুলো পড়লে আপনাদের উপকারে আসবে।
আরও দেখুনঃ