আপনারা যারা এলার্জি থেকে মুক্তির উপায় জানতে চান। তাদের জন্য আজকের এই পোস্ট এ এলার্জি থেকে মুক্তির উপায় সম্পর্কে সকল তথ্য তুলে ধরা হয়েছে। তাই আজকের এই পোস্ট থেকে দেখে নিন এলার্জি থেকে মুক্তির উপায়। বেশিরভাগ মানুষ এলার্জি থেকে মুক্তির উপায় সম্পর্কে জানতে চাই। তারা যাতে সঠিকভাবে সকল তথ্য জানতে পারে। তাদের জন্য আজকের এই পোস্ট এ এলার্জি থেকে মুক্তির উপায় উল্লেখ করা হয়েছে। এবং উল্লেখ করা হয়েছে কিভাবে এলার্জি দূর করা যায়।
Contents
এলার্জির প্রাথমিক চিকিৎসা
এখানে আমরা এলার্জির প্রাথমিক চিকিৎসা সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য দেখতে পাবেন।
- এলার্জেন পরিহারঃ যখন এলার্জির সুনির্দিষ্ট কারণ খুঁজে পাওয়া যায়, তখন তা পরিহার করে চললেই সহজ উপায়ে এলার্জি নিয়ন্ত্রণ করা যায়।
- ওষুধ প্রয়োগঃ এলার্জিভেদে ওষুধ প্রয়োগ করে এলার্জি উপশম অনেকটা পাওয়া যায়।
- এলার্জি ভ্যাকসিন বা ইমুনোথেরাপিঃ এলার্জি দ্রব্যাদি থেকে এড়িয়ে চলা ও ওষুধের পাশাপাশি ভ্যাকসিনও এলার্জিজনিত রোগীদের সুস্হ থাকার অন্যতম চিকিৎসা পদ্ধতি। এ পদ্ধতি ব্যবহারে কর্টিকোষ্টেরয়েডের ব্যবহার অনেক কমে যায়। ফলে কর্টিকোষ্টেরয়েডের বহুল পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া থেকে রেহাই পাওয়া যায়। বিশ্বের অধিকাংশ দেশে, বিশেষ করে উন্নত দেশগুলোতে এ পদ্ধতিতে চিকিৎসা দেয়া হয়ে থাকে। বর্তমানে বিশ্বস্বাস্হ্য সংস্হাও এই ভ্যাকসিন পদ্ধতির চিকিৎসাকে এলার্জিজনিত রোগের অন্যতম চিকিৎসা বলে অভিহিত করে। এটাই এলার্জি রোগীদের দীর্ঘমেয়াদি সুস্হ থাকার একমাত্র চিকিৎসা পদ্ধতি।
- আগে ধারণা ছিল এলার্জি একবার হলে আর সারে না। কিন্তু বর্তমানে চিকিৎসা ব্যবস্হার যথেষ্ট উন্নতি হয়েছে। প্রথম দিকে ধরা পড়লে এলার্জিজনিত রোগ একেবারে সারিয়ে তোলা সম্ভব। অবহেলা করলে এবং রোগ অনেক দিন ধরে চলতে থাকলে নিরাময় করা কঠিন হয়ে পড়ে।
এলার্জি থেকে মুক্তির উপায়
অ্যালার্জি থেকে মুক্ত থাকার সবচেয়ে ভালো উপায় হলো, যে বস্তুতে অ্যালার্জি রয়েছে, তার সংস্পর্শ এড়িয়ে চলা। যেমন, যার ডিটারজেন্ট বা সাবানে অ্যালার্জি, তিনি বাসনকোসন, কাপড়চোপড় ধোয়ার সময় হাতে গ্লাভস পরবেন। যার অলংকারে অ্যালার্জি, তিনি তা ব্যবহার থেকে বিরত থাকার চেষ্টা করবেন। এ ক্ষেত্রে রোগীর যেসব বস্তুতে অ্যালার্জি, সেগুলোর একটি তালিকা করতে পারেন। স্কিন টেস্ট করে এটা বোঝা যায়। কোনো ওষুধে অ্যালার্জি হলে অবশ্যই তার নাম লিখে রাখবেন এবং চিকিৎসককে অবহিত করবেন।
ত্বকে প্রদাহ বা অ্যালার্জি হয়ে গেলে তা কমাতে চিকিৎসকের পরামর্শে অ্যান্টিহিস্টামিন, স্টেরয়েড মলম, ক্যালামিন লোশন ইত্যাদি ব্যবহার করতে পারেন। হঠাৎ লাল হয়ে চুলকানির ক্ষেত্রে ঠান্ডা সেঁক বা ঠান্ডা পানি দিয়ে গোসল করলে খানিকটা আরাম পাওয়া যায়। এ সময় বাতাস চলাচল করে এমন পাতলা সুতি কাপড় পরুন। প্রসাধনসামগ্রীতে অ্যালার্জি থাকলে রাসায়নিকযুক্ত প্রসাধনসামগ্রীর ব্যবহার এড়িয়ে চলতে হবে।
স্কিন এলার্জি থেকে মুক্তির উপায়
খুব সহজ একটি উপায়ে এ বির*ক্তিকর এলার্জি থেকে সারা জীবনের জন্য মুক্তি পেয়ে যাবেন। তাও খুবই স্বল্প খরচে। চলুন তবে জেনে নেয়া যাক সেই উপায়টি-
- এক কেজি নিমপাতা ভালো করে রোদে শুকিয়ে নিন। শুকনো নিমপাতা পাটায় পিষে গুঁড়া করুন এবং সেই গুঁড়া ভালো একটি কৌটায় সংরক্ষণ করুন। এবার ১ চা চামচের তিন ভাগের এক ভাগ নিমপাতার গুঁড়া ও এক চা চামচ ইসবগুলের ভুষি ১ গ্লাস পানিতে আধা ঘণ্টা ভিজিয়ে রাখুন। আধা ঘণ্টা পর চামচ দিয়ে ভালো করে নাড়ুন।
- প্রতিদিন সকালে খালি পেটে, দুপুরে ভরা পেটে এবং রাত্রে শোয়ার আগে সেই পানীয় খেয়ে ফেলুন। এভাবে ২১ দিন একটানা খেতে হবে। কার্যকারিতা শুরু হতে এক মাস সময় লাগতে পারে। এলার্জির জন্য যা যা খাওয়া নিষেধ যেমন-হাঁসের ডিম, বেগুন, গরু, চিংড়িসহ অন্যান্য খাবার খাওয়া থেকে বিরত থাকুন।
এলার্জি থেকে চিরতরে মুক্তির ঘরোয়া উপায়
১ কেজি নিম পাতা ভালো করে রোদে শুকিয়ে নিন। শুকনো নিম পাতা পাটায় পিষে গুঁড়ো করুন এবং তা ভালো করে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন একটি কৌটায় ভরে রাখুন। এক চা চামচের ৩ ভাগের ১ ভাগ নিমপাতার গুঁড়া এবং ১ চা চামচ ইসবগুলের ভুষি ১ গ্লাস পানিতে আধা ঘণ্টা ভিজিয়ে রাখুন। আধা ঘণ্টা পর চামচ দিয়ে ভালো করে নাড়ুন।
প্রতিদিন সকালে খালি পেটে, দুপুরে ভরা পেটে এবং রাতে শোয়ার আগে খেয়ে ফেলুন। ২১ দিন একটানা খেতে হবে। কার্যকারিতা শুরু হতে ১ মাস লেগে যেতে পারে। এরপর থেকে এলার্জির জন্য যা যা খেতে পারতেন না, যেমন- হাঁসের ডিম, বেগুন, গরুর গোশত, চিংড়ি, কচু, কচুশাক, গরুর দুধ, পুঁইশাক, মিষ্টি কুমড়াসহ অন্যান্য খাবার খান। আর সমস্যা হবে না।
র*ক্তের এলার্জি দূর করার ঘরোয়া উপায়
- একটি ঠান্ডা স্নান ত্বকের জ্বালা এবং অ্যালার্জি হ্রাস করতে সহায়তা করে। একটি শীতল ঝরনা আপনার র*ক্তনালীগুলি সঙ্কুচিত করতে সহায়তা করে এবং হিস্টামিন বেরোতে দেয় না। এটি অ্যালার্জির তীব্রতা এবং ত্বকের জ্বালাও হ্রাস করে।
- অতিরিক্ত ভার্জিন জলপাই তেল দুর্দান্ত ময়েশ্চারাইজার হিসাবে আশ্চর্য করে। ভিটামিন ই সমৃদ্ধ, অ্যালার্জির সমস্যা পরে ত্বক নিরাময় এবং মেরামত করতে সহায়তা করে এবং চুলকানি হ্রাস করে। রাসায়নিক-বোঝাই ময়েশ্চারাইজারগুলির সাথে তুলনা করার সময় এই প্রতিকারটি সবচেয়ে ভাল।
- বেকিং সোডা ত্বকের অ্যালার্জির জন্য একটি দুর্দান্ত ঘরোয়া উপায়। এটি ত্বকের ফুসকুড়ি দূর করতে সহায়তা করে, চুলকানি থেকে মুক্তি দেয় এবং ত্বকের আরও প্রদাহ রোধ করে।
- অ্যাপল সিডার ভিনেগার হ’ল অনেক রোগের জন্য আশ্চর্য নিরাময়। যা অ্যালার্জি দূর করবে।
- অ্যালোভেরা জেল পুনরুদ্ধার প্রক্রিয়াটিকে গতি দেয় এবং প্রশস্ত স্বস্তি দেয়, এটি দেহের ত্বকের অ্যালার্জির অন্যতম সেরা প্রতিকার।
- শিশু এবং শিশুদের মধ্যে ত্বকের অ্যালার্জির একটি নিরাপদ ঘরোয়া উপায় হল নারকেল তেল।
- নিম পাতার ওষধি গুণাবলী জন্য ভারতে ব্যাপকভাবে ব্যবহৃত আরও একটি জনপ্রিয় ভেষজ। এটি প্রদাহ বিরোধী বৈশিষ্ট্যের কারণে লালচেভাব, ফোলাভাব এবং চুলকানি লাঘব করতে পারে।
- তুলসিতে ব্রড-স্পেকট্রাম অ্যান্টিমাইক্রোবিয়াল বৈশিষ্ট্যগুলি প্রদর্শন করে যা ত্বকে কার্যকরভাবে সংক্রমণের হাত থেকে রক্ষা করতে পারে। এটিতে অ্যান্টি-ইনফ্ল্যামেটরি বৈশিষ্ট্য রয়েছে যা ফুলে যাওয়া এবং চুলকানি হ্রাস করে, এটি প্রাকৃতিকভাবে ত্বকের অ্যালার্জি থেকে মুক্তি পেতে কার্যকর করে তোলে।
ঠান্ডা এলার্জির ঘরোয়া চিকিৎসা
একটু শীতেই অনেকে সর্দি, কাশি, গলা ব্যথায় ভোগেন যা কোল্ড এলার্জি নামে পরিচিত। এটা ঘাবড়াবার মত তেমন কিছু নয় এবং কিছু স্বাস্থ্য বিধি মেনে চললেই এ থেকে রক্ষা পাওয়া সম্ভব। যেমন-
- বেশি করে পানি পান করা।
- বিশেষ পথ্যের দরকার নেই, তবে ফলের রস বিশেষত কমলা লেবু বা পাতি লেবুর রস খেলে উপকার পাওয়া য…
- গরম পানির ভাপ নেওয়া অন্তত দিনে চারবার।
- এক টুকরো মিছরি, লবঙ্গ বা আদা মুখে রাখা।
- মধুর সাথে তুলসী বা বাসক পাতার রস মিলিয়ে খাওয়া।
- সর্দি-কাশির সাথে গলা ব্যথা হলে এক গ্লাস গরম পানিতে এক চামচ লবণ দিয়ে দিনে ২ থেকে ৩ বার গার্গল বা কুলকুচা করা।
- সমপরিমাণ মধু আর লেবুর রস মিশিয়ে ১০ মিনিট অন্তর বড় চামচের এক চামচ খেলে গলা ব্যথায় আরাম পাওয়া যায়।
- ৫ গ্রাম শুকনো হলুদ গুড়ো, ২৫০ মি.লি. দুধ এবং ২ চামচ চিনি ১০ থেকে ১২ মিনিট ফুটিয়ে সে দুধ খেলে সর্দি কমে যায়।
- আদা ও তুলশী পাতা এক গ্লাস পানিতে ফুটিয়ে তাতে এক কাপ মধু মিশিয়ে দিনে ৪ থেকে ৫ বার খেলে উপকার পাওয়া যায়।
- খানিকটা পানি ফুটিয়ে তার সাথে একটি পাতি লেবুর রস আর অল্প চিনি বা লবণ মিশিয়ে গরম গরম খেলে আরাম পাওয়া যায়।
- সর্দি-কাশি লেগে থাকলে ওল পোড়ার সাথে নারকেল কোরা ও ৫ থেকে ৭ ফোঁটা ঘি মিশিয়ে খেলে সর্দির দোষটা কেটে যাবে।
উপরোক্ত টিপস্গুলো মেনে চললে ঠান্ডা একেবারে সেরে যাবে, তবে অবস্থার যদি খুবই অবনতি ঘটে তবে চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।
এলার্জি প্রতিরোধের প্রাকৃতিক উপায়
- ১ কেজি নিম পাতা ভালো করে রোদে শুকিয়ে নিন। শুকনো নিম পাতা পাটায় পিষে গুড়ো করুন এবং সেই গুড়ো ভালো একটি কৌটায় ভরে রাখুন। এবার ইসব গুলের ভুষি কিনুন।
- ১ চা চামচের তিন ভাগের এক ভাগ নিম পাতার গুড়া ও এক চা চামচ ভুষি ১ গ্লাস পানিতে আধা ঘণ্টা ভিজিয়ে রাখুন। আধঘণ্টা পর চামচ দিয়ে ভালো করে নাড়ুন।
- লেবু – ভিটামিন সি তে ভরপুর লেবু যে কোন চুলকানি খুব সহজেই দূর করে দেয়। বিশেষ করে লেবুর ভোলাটাইল তেল শরীরের যেকোন রকমের চুলকানি দূর করতে সাহায্য করে থাকে। লেবু টুকরা করে কেটে নিয়ে চুলকানির স্থানে কিছুক্ষণ ঘষুন দেখবেন চুলকানি কবে যাবে।
- পেট্রোলিয়াম জেলি – যদি আপনার ত্বক খুব নাজুক হয়ে থাকে তাহলে খুব সহজেই পেট্রোলিয়াম জেলি ব্যবহার করতে পারেন কারণ এর কোন বিপরীত প্রতিক্রিয়া নেই এবং এই জেলিতে কোন ধরণের বিষাক্ত পদার্থ নেই যা আপনার ত্বকের ক্ষতি করবে। তাই শরীরের কোন অংশে চুলকানি হলে আপনি পেট্রোলিয়াম জেলি ব্যবহার করতে পারেন।
- অ্যালোভেরা – অ্যালোভেরাতে রয়েছে প্রচুর পরিমানে মশ্চারাইজিং ক্ষমতা। এবং এটি আমাদের ত্বকের জন্য খুব ভালো। শরীরের যেকোন জায়গায় চুলকানি হলে অ্যালোভেরা কেটে এক টুকরা নিয়ে সেখানে ঘষুন চুলকানি চলে যাবে।
- তুলসী পাতা – কর্পূর সমৃদ্ধ তুলসী পাতা ত্বকের যেকোন ধরণের জ্বালা পোড়া ও চুলকানি তামাতে সহায়তা করে। কয়েকটি তুলসী পাতা নিয়ে ধুয়ে নিন তারপর যেখানে চুলকানি হয়েছে সেখানে পাতা গুলো কিছুক্ষণ ঘষুন। অথবা কিছু তুলসী পাতা পানিতে দিয়ে সিদ্ধ করে সেই পানি বরফ করুন এবং চুলকানি স্থানে ঘষুন।
সর্বশেষ কথা
আশা করি আজকের পোস্ট এর সাহায্যে এলার্জি থেকে মুক্তির উপায় সম্পর্কে জানতে পেরেছেন। আপনাদের যদি আজকের এই পোস্ট গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে হয়। তাহলে অবশ্যই সবার সাথে শেয়ার করবেন। আরো নতুন তথ্য পেতে এলার্জি থেকে মুক্তির উপায় জানতে আমাদের ওয়েবসাইট ভিজিট করবেন।
আরও দেখুনঃ