আদার উপকারিতা ও অপকারিতা ২০২৪

আজকে আমরা কথা বলবো আদার খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা নিয়ে। বাঙালি আদা প্রিয় মানুষ। তাই বাংলাদেশের বেশিরভাগ মানুষ আদার খেতে ভালোবাসে। তাই অনেকে ইন্টারনেটে আদার উপকারিতা ও আদা খাওয়ার সঠিক সময় জানতে চেয়ে অনুসন্ধান করে। আজকের এই পোস্টে আমরা শিশুদের আদা খাওয়ার উপকারিতা উল্লেখ করেছি। তাই আজকের এই পোস্ট থেকে দেশী আদার উপকারিতা জেনে নিন।

আদার উপকারিতা

আদার মধ্যে রয়েছে বিভিন্ন ভিটামিন। তাই এটা আমাদের শরীর গঠনে ভূমিকা রাখে। তাই আমাদের মাঝে অনেকেই আছে যারা সব সময় আদার খেতে ভালোবাসে। তাদের জন্য আজকের এই পোস্ট এ আদার খাওয়ার উপকারিতা তুলে ধরা হয়েছে।

  • পেটের অস্বস্তি বা পীড়ায় আদা একটি আদর্শ পথ্য।
  • ফুসফুসের সাধারণ যে কোন সংক্রমণ বা রোগের ক্ষেত্রে আদা বেশ কার্যকরী।
  • সর্দি- কাশি, শ্বাস- প্রশ্বাসের সাধারণ সমস্যা দূর করে আদা।
  • গলা ও স্বরতন্ত্রী পরিষ্কার রাখে।
  • কাঁচা আদা ব্যথানাশক হিসাবে কাজ করে।
  • রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়।
  • দেহের কোথাও ক্ষত থাকলে তা দ্রুত শুকাতে সাহায্য করে আদা।
  • র*ক্তের অনুচক্রিকা এবং হৃদযন্ত্রের কার্যক্রম ঠিক রাখতে আদা খুবই কার্যকর।
  • মাইগ্রেনের ব্যথা ও ডায়াবেটিসজনিত কিডনির জটিলতা দূর করে আদা।
  • গর্ভবতী মায়েদের সকাল বেলা, বিশেষ করে গর্ভধারণের প্রথম দিকে শরীর খারাপ লাগে। কাঁচা আদা দূর করে এ সমস্যা।
  • পরিমিত আদা খাওয়ার অভ্যাসে শরীরের র*ক্ত সঞ্চালন প্রক্রিয়া স্বাভাবিক হয়।
  • বমিভাব দূর করে।
  • ঠাণ্ডা লাগা ও ভাইরাস জ্বর প্রতিরোধে আদা বিশেষ ভূমিকা রাখে।

আদা গরম পানির উপকারিতা

গরম পানির সঙ্গে আদা মিশিয়ে খেলে বাতের ব্যথাও কমে। একদল মার্কিন গবেষক দাবি করেন, আর্থ্রাইটিসের মতো সমস্যাও কমে যেতে পারে আদার রসে।

  • প্রতিদিন সকালে এক কাপ আদা গরম পানি খেলেই দূর হবে সর্দি, কাশি, জ্বর ও গা ব্যথা। একাধিক গবেষণায় দেখা গেছে, ব্যাক্টেরিয়া ঘটিত যে কোন সংক্রমণ ঠেকাতে আদার রস খুবই কার্যকরী।
  • বদহজমে কেবল আদা নয়, আদা দিয়ে ফোটানো পানি খুব উপকারে আসে। আদা-পানি খাবারকে সহজপাচ্য করে হজমশক্তি বাড়িয়ে শরীরকে সুস্থ করে তোলে। সামান্য অনিয়ম হলেও তার সঙ্গে লড়ার শক্তি বাড়িয়ে দেয়।
  • জিম সেরে এসে বা শরীরচর্চা, অতিরিক্ত শ্রমের পর পেশীতে টান বা ব্যথা হলে আদা ফুটিয়ে সেই পানি ছেঁকে খাবেন। দিন কয়েক খাওয়ার পর পেশীতে ব্যথার এই প্রবণতা ধীরে ধীরে কমতে থাকবে।
  • ঠান্ডা লেগে গলা ভেঙে গেলে, কাশিতে গলা খুশ খুশ করলে আদা কুচিয়ে পানিতে ফেলে দিন। উষ্ণ সেই পানি পান করুন দিনে দুই থেকে তিন বার। ঠাণ্ডাজনিত প্রদাহ কমিয়ে গলাকে আরাম দিতে অতি কার্যকর এই প্রক্রিয়া।
  • শরীরের মেটাবলিজম বাড়াতে আদা-পানি যা গ্রিন টির মতোই কার্যকর।
  • আদার সঙ্গে পানি, মধু ও লেবু মিশিয়ে খেলে মেদ ঝরবে দ্রুত।
  • অস্ট্রেলিয়ায় এক গবেষণায় দেখা গেছে, আদা শরীরের র*ক্তজমাট দূর করতে সাহায্য করে। র*ক্তের জীবাণু দূর করতেও এটি ওষুধ হিসেবে কাজ করে।

আদা চা এড় উপকারিতা

১) হার্ট ভাল রাখে।

২) মনোসংযোগ বৃদ্ধিকরে।

৩) হজম শক্তি বৃদ্ধি করে।

৪) ডায়াবেটিস প্রতিরোধ করে।

৫) রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে।

৬) ওজন কমাতে সাহায্য করে।

৭) ত্বকের উজ্জ্বলতা বৃদ্ধি করে।

আদা ও মধু খাওয়ার উপকারিতা

আদা এবং মধু খাওয়ার সবথেকে ভাল উপায় হল, এক চা চামচ আদার রস এবং এক চামচ মধু মিশিয়ে তারপর খাওয়া। নিম্নে আদা ও মধুর একত্রে খাওয়ার বেশ কিছু উপকারিতা উল্লেখ করা হলো –

১) শ্বাসকষ্ট সারাতে সাহায্য করে

২) শ্বাস প্রশ্বাস পদ্ধতিতে উন্নতি ঘটায়

৩) বমি হওয়ার সম্ভাবনা দূর করে

৪) ক্যান্সার রোধ করে

৫) হজমে সাহায্য করে

৬) হার্ট ভাল রাখতে সাহায্য করে

৭) ঋতুস্রাবের ব্যাথা দূর করে

৮) মাথা ব্যাথা ও যন্ত্রণা দূর করে

৯) স্ট্রোক হওয়ার আশঙ্কা কমায়

১০) রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ে

আদা খাওয়ার নিয়ম

কথায় আছে, কাঁচা আদার জুরি নেই। কিন্তু অনেকেই আদা কাঁচা খেতে পারেন না। কিন্তু তাহলে রোগ সারবে কি করে? নিশ্চিন্ত থাকুন, আদা খাওয়ার নিয়ম আছে, যাতে অনেকটা পরিমাণ আদা খাওয়াও হবে সঙ্গে হবে রোগ নির্মূল। পদ্ধতিগুলি নীচে দেওয়া হল –

  • গরম চায়ে আদার রস
  • স্যুপ
  • মাছের সঙ্গে আদা
  • আদার সিরাপ
  • আদা, লেবু ও মধু
  • মিষ্টি খাবারের সঙ্গে আদা

চুলে আদার উপকারিতা

  • হেয়ার ফলের মাত্রা কমে।
  • খুশকির প্রকোপ কমে
  • চুলকে আদ্র রাখে
  • চুলের স্বাস্থ্যের উন্নতি ঘটে
  • চুল উজ্জ্বলতা বৃদ্ধি পাবে
  • চুলের গ্রাথ বাড়াতে কাজে আসে

আদার অপকারিতা

  • অন্তঃসত্ত্বারা আদা খেলে, প্রিম্যাচিওর শিশু জন্মের আশঙ্কা বেড়ে যায়।
  • আদা ডায়বেটিসের লেভেল কমাতে কার্যকর হলেও যারা ডায়বেটিস নিয়ন্ত্রণের জন্য ওষুধ খান তাদের মোটেও আদা খাওয়া যাবে না।
  • আদা উচ্চ র*ক্তচাপ লেভেল কমাতে কার্যকর হলেও যারা উচ্চ র*ক্তচাপ নিয়ন্ত্রণের জন্য ওষুধ খান তাদের মোটেও আদা খাওয়া যাবে না।
  • ওজন বাড়াতে চান তাহলে আপনাকে অবশ্যই আদার ব্যবহার পরিহার বা এড়িয়ে চলতে হবে। কারণ চর্বি গলানোর প্রক্রিয়ায় বিশেষ সহায়কের কাজ করে এই আদায়। আবার আদায় প্রচুর খিদে কমায়। তাই আপনি ওজন কমাতে চাই তাদের জন্য কোনো কাজে আসবে না।

সর্বশেষ কথা

আশা করি আজকের পোস্ট এর সাহায্যে সবাই আদার খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে জানতে পেরেছেন। আপনাদের যদি আদার উপকারিতা ও অপকারিতা পোস্ট ভালো লেগে থাকে। তাহলে অবশ্যই সবার সাথে শেয়ার করবেন। যাতে সবাই আদার খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে জানতে পারে। সাথে থাকার জন্য সবাইকে ধন্যবাদ।

আরও দেখুনঃ 

Leave a Comment